Uluberia

Uluberia: বাঁধ সারানোর টাকা জুটছে না সরকারের

সম্প্রতি হুগলি নদীর পাড়ে ধস নামে শ্যামপুরের বাসুদেবপুরে। টাকার অভাবে তাপ্পি দিয়ে কোনওমতে মেরামতি করা হয়েছিল।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩২
Share:

বাসুদেবপুরে হুগলি নদীর বাঁধে ধস। ছবি: সুব্রত জানা

চার বার টেন্ডার হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বকেয়া না মেলায় সেই টেন্ডারে যোগই দেয়নি ঠিকা সংস্থাগুলি। তার ফলে বাউড়িয়ায় সংস্কার করা যায়নি হুগলি নদীর বাঁধ।

Advertisement

উলুবেড়িয়ার জগদীশপুরেও হুগলি নদীর বাঁধে ভাঙন হয়েছে। মেরামত করার টাকা নেই বলে হাত তুলে নিয়েছে সেচ দফতর।

তার ফল ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা। টানা বৃষ্টিতে গঙ্গার পাড় ভাঙতে ভাঙতে অনেকের বাড়ির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। রোজই তাঁরা ভয় পান, এই বুঝি বাড়িটা ঝুপ করে তলিয়ে গেল! পুজোর কমিটিগুলিকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুদান নিয়ে বিরক্তির সীমা নেই এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘সরকার পুজোয় কোটি কোটি টাকা অনুদান দিতে পারে। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে বাঁধ মেরামতের টাকা দিতে পারে না কেন?’’

Advertisement

সম্প্রতি হুগলি নদীর পাড়ে ধস নামে শ্যামপুরের বাসুদেবপুরে। টাকার অভাবে তাপ্পি দিয়ে কোনওমতে মেরামতি করা হয়েছিল। সম্প্রতি সেই এলাকায় ফের ধস নেমেছে। নিম্ন মানের কাজের প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। সম্প্রতি শ্যামপুরেরই শসাটিতে রূপনারায়ণের বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হলে তা কতদিন থাকবে, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ সেচ দফতরের আধিকারিকরাই।

ঠিকা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, আমপান ও ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় নদী বাঁধের ক্ষতি হয়েছিল মারাত্মক। সেই সময় সেগুলি সারানো হলেও সরকারের তরফে একটা টাকাও মেটানো হয়নি। সংস্থাগুলির দাবি, তাদের বকেয়া প্রায় ৫০ কোটি টাকা। সেই বকেয়া না মেটালে পরবর্তী কোনও কাজে তাদের হাত দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, এই পরিস্থিতি বড় সংস্থাগুলো কোনওক্রমে সামাল দিতে পারলেও ছোটগুলি একেবারে ফতুর হয়ে গিয়েছে।

সে কারণে বাঁধে জোড়াতালি দেওয়ার জন্য বড় ঠিকা সংস্থাগুলিকেই কোনওক্রমে রাজি করাচ্ছেন সেচ দফতরের বাস্তুকারেরা। এমনই এক সংস্থার মালিকের কথায়, ‘‘সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে অনেক দিনের সম্পর্ক। তাঁদের অনুরোধ ফেলতে না পেরেই জরুরি কাজগুলি সেরে দিতে হচ্ছে। তবে আমাদের পুঁজিরও তো শেষ আছে। কতদিন করতে পারব জানি না। আমাদের টাকা না মিটিয়ে এমন মোচ্ছবের কোনও মানে হয় না।’’

পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়ে রাজ্য সেচ দফতরের বাস্তুকাদের একাংশের দাবি, শুধু হাওড়া জেলাতেই যে পরিমাণ টাকা পুজোয় অনুদান দেওয়া হচ্ছে, তা সেচ দফতরকে দেওয়া হলে বহু মানুষকে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা থেকে মুক্তিদেওয়া যেত।

কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না গঙ্গার ভাঙনপ্রবণ এলাকার বাসিন্দারা। এক প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘ক্লাবগুলোকে টাকা দিয়ে ভোট কেনা চলছে। আমরা ভেসে গেলেই বা সরকারের কি? বাঁধ সারানোর টাকা ওদের একেবারেই নেই, না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন