ফের ফ্লেক্স লাগিয়ে মিলল নিস্তার

TMC: মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরানো নিয়ে অধ্যক্ষকে ঘেরাও

বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ও যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে সমীকরণ সরল নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২১ ০৭:২৩
Share:

বলাগড় সরকারি কলেজে এই ফ্লেক্স নিয়ে বিতর্ক। ছবি: সুশান্ত সরকার।

কলেজে ঢোকার মুখে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে দেওয়া নিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বলাগড় বিজয়কৃষ্ণ কলেজের অধ্যক্ষ। মঙ্গলবার রাত ৯টা পর্যন্ত অধ্যক্ষ প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। তারপর ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কলেজের সামনে টাঙিয়ে নিস্তার পান তিনি।

Advertisement

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে। কলেজের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে তিনটি ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছিল। তার প্রতিটিতেই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। মুখ্যমন্ত্রী ছবির নীচে একটিতে ছিল অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়, একটিতে রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ও আর একটিতে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অসীম মাঝির ছবি।

মঙ্গলবার দুপুরে অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে কলেজে আসেন বলাগড়ের বিধায়ক তথা কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তিনি অধ্যক্ষকে জানান, সরকারি কলেজে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া আর কারও ছবি লাগানো যাবে না। তিনি ওই ফ্লেক্সগুলি সরানোর নির্দেশ দেন। নির্দেশ মেনে অধ্যক্ষ সরিয়ে দেন ফ্লেক্সগুলি।

Advertisement

এরপরই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা অভিযোগ তোলে, ফ্লেক্সগুলি সরিয়ে রাখা হয়েছে শৌচাগারে। কেন এমন করা হল, তার জবাবদিহি চাওয়া হয় অধ্যক্ষের কাছে। ছাত্রনেতা সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কয়েকশো কলেজ পড়ুয়া রাত ৯টা পর্যন্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রাখে। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লেক্সের সামনে দাঁড় করিয়ে অধ্যক্ষকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয় বলেও অভিযোগ। ফের কলেজের সামনে ওই ফ্লেক্সগুলি লাগিয়ে ছাড় পান অধ্যক্ষ।

প্রতাপবাবুর অভিযোগ, ‘‘শুধু কলেজ পড়ুয়া নয়, অনেক বহিরাগতও ছিল। বিধায়কের কথাতেই ওই ফ্লেক্স সরিয়েছিলাম। বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছি।’’ এ বিষয়ে বিধায়কের জবাব, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছাড়া অন্য কোনও তৃণমূল নেতার ছবি কেন থাকবে? সরকারি প্রকল্পের ছবি থাকতে পারে। এমনকী আমার ছবিও কলেজে থাকবে না। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’

তবে বিষয়টিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া দেখছে রাজনৈতিক মহল। বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ও যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে সমীকরণ সরল নয়। সে কারণেই বিধায়কের এই নির্দেশ বলে মনে করছেন অনেকে। আবার কলেজের ছাত্র সংসদ শান্তনুর অনুগামী। সেই কারণেই এই সংঘাত বলে অনুমান। এ দিনের ঝামেলা প্রসঙ্গে শান্তনু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ছবি শৌচাগারে কেন রাখা হবে? সমস্ত বিষয়টি রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বেকে জানাব।’’

অধ্যক্ষের এমন অপমানে ক্ষুব্ধ কলেজের অন্য শিক্ষকরাও। ঘটনায় বিরক্ত তৃণমূল জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবও। তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষকের এমন অপমান মানা হবে না। আমি অধ্যক্ষর সঙ্গে কথা বলতে কলেজে যাব। প্রয়োজনে রাজ্যস্তরের নেতাদেরও বিষয়টি জানাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement