পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উপ-পুরপ্রধানের
Cyclone Yaas

ফ্ল্যাট থাকতে দুঃস্থরা কেন ত্রাণ শিবিরে, প্রশ্ন

দুঃস্থ পরিবারের মানুষের জন্য তৈরি প্রায় সাড়ে তিনশো ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে ফাঁকা পড়ে থাকার অভিযোগ তুললেন তারকেশ্বর পুরসভার বিদায়ী উপপ্রধান।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২১ ০৫:২৪
Share:

পড়ে রয়েছে ফাঁকা ফ্ল্যাট। ছবি: দীপঙ্কর দে।

ইয়াসের ঝাপটা আর নদীতে জল বাড়ায় তারকেশ্বরের বিভিন্ন স্কুলে যে ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েকশো মানুষ। অথচ এমন দুঃস্থ পরিবারের মানুষের জন্য তৈরি প্রায় সাড়ে তিনশো ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে ফাঁকা পড়ে থাকার অভিযোগ তুললেন তারকেশ্বর পুরসভার বিদায়ী উপপ্রধান উত্তম কুণ্ডু।

Advertisement

পুরবোর্ডের ‘অকর্মণ্যতা’কে দুষে তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ত্রাণ শিবিরের ওই মানুষের জন্য খারাপ লাগছে। আমাদের বোর্ডের অপদার্থতাতেই অন্তত ৩৫০ মানুষ ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। ওই গরিব মানুষগুলো চাবি পেলে তাঁরা আজ ফ্ল্যাটে থাকতেন। ত্রাণ শিবিরে নয়। এমন ভূমিকাহীন পুর প্রশাসক হয়ে আমি আর থাকতে চাই না। দলকে পদত্যাগের বিষয় দ্রুত জানাব।’’

তারকেশ্বর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে ‘হাউজিং ফর আরবান পুওর’ নামে গরিবদের জন্য ঘর তৈরির এই প্রকল্প শুরু হয়। ওই প্রকল্পের ৬৪ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার এবং ৩৬ শতাংশ দেওয়ার কথা রাজ্যের। পুর এলাকার মধ্যেই গৃহহীনদের সেই ফ্ল্যাট পাওয়ার কথা। পুর কর্তৃপক্ষ জমি দেন। অন্তত ২০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বহু ফ্ল্যাট তৈরিও হয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের শর্ত ভাঙায় কেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিকভাবে ২ কোটি টাকা দেওয়ার পরে ওই কাজে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ওই প্রকল্পের ঠিকাদারদের টাকা আটকে যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে সংশোধিত প্ল্যান চাওয়া হয়।

Advertisement

কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষ এর পরে আর বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি। বিদায়ী উপপুরপ্রধান উত্তমবাবুর অভিযোগ, ‘‘সরকারি প্রকল্পে কোনও সমস্যা হলে তা বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হোক। প্রয়োজন হলে সরকারি দফতরে আমরা, কাউন্সিলররা যাব। কিন্তু পুরপ্রধান কী যে লুকোতে চান, কে জানে! মানুষ আমাদের বিধানসভায় ঢেলে ভোট দিয়েছেন। সামনে পুর নির্বাচন। মানুষ কে আমরা কী জবাব দেব?’’

এই বিষয়ে পুর প্রশাসক স্বপন সামন্ত বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পের একটা সমস্যা আছে। কথা বলে মিটিয়ে এনেছিলাম প্রায়। নির্বাচন, কোভিড সব মিলিয়ে দেরি হচ্ছে। তবে এ বার মিটে যাবে। আর গত ছয় বছর ধরেই শুনেছি আসছি উপপুরপ্রধান নাকি আর পদে থাকবেন না। কিন্তু কোনও বদল তো দেখি না।’’

হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘তারকেশ্বরের এই সরকারি প্রকল্পটি নিয়ে আমার বিশেষ কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন