tree

Goghat incident: গোঘাটে গাছ কাটা রুখলেন গ্রামবাসী

পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অনুমোদন নিয়েই গত ২ মে পঞ্চায়েতই অঞ্চল নেতা মহাদেব সাহানার তদারকিতে মোট ১৮০টি গাছ কাটার দরপত্র ডাকা হয়েছিল দু’বার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ০৭:৩০
Share:

কাটা গাছ পড়ে রয়েছে। গোঘাটের বদনগঞ্জ-ফুলুই এলাকায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

প্রশাসনের নজরে এনে এলাকার গাছ কাটা রুখে দিলেন গোঘাট-২ ব্লকের বদনগঞ্জ-ফুলুই ১ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। রবিবার ভোর থেকে শাসক দলের কিছু নেতার মদতে ফুলুই গ্রামের হেঁসপুকুর সংলগ্ন রাস্তার দু’দিকে ইউক্যালিপটাস-সহ বেশ কিছু গাছ কাটা হচ্ছিল বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। ব্লক প্রশাসনের নির্দেশে ৩৫টি কাটা গাছ আটক করা হয়। থেমে যায় গাছ কাটা।

Advertisement

অভিযোগকারীদের মধ্যে মন্টু ঘোষ বলেন, ‘‘ভোর থেকে গাছ কাটার শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। আমরা জনাদশেক গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে চাইলে গাছ কাটার তদারকিতে থাকা লোকজন জানান, পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ স্বপন সাহানা এবং তৃণমূলের অঞ্চল নেতা মহাদেব সাহানাদের অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা হচ্ছে। বিষয়টা পঞ্চায়েতও জানে।”

এরপরেই মন্টু-সহ কয়েকজন গ্রামবাসী পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষালের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানতে চান। প্রসেনজিৎ জানিয়ে দেন, গাছ বিক্রির দরপত্রই ডাকা হয়নি। তখনই বিডিও-কে এবং থানায় ফোন করেন গ্রামবাসী। তার মধ্যেই ৩৫টি গাছ কাটা হয়ে যায়। বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “কাটা সব গাছ আটক রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। আইন খতিয়ে দেখে সেইমতো পদক্ষেপ করা হবে।”

Advertisement

গাছ কাটায় কোনও অনিয়ম হয়নি বলে দাবি পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ স্বপন সাহানার। তিনি বলেন, “দরপত্র নিয়ে উপপ্রধানই বিভ্রান্ত করেছেন। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অনুমোদন নিয়েই গত ২ মে পঞ্চায়েতই অঞ্চল নেতা মহাদেব সাহানার তদারকিতে মোট ১৮০টি গাছ কাটার দরপত্র ডাকা হয়েছিল দু’বার করে। দ্বিতীয়বার দাম মিলেছে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এতে দুর্নীতি কই?” তবে বন দফতরের অনুমতি এখনও নেওয়া হয়নি বলে স্বীকার করেছেন স্বপন। তিনি বলেন, “কথা ছিল, গত ৩০ এপ্রিল ঝড়ে ভেঙে চাষিদের জমিতে পড়ে থাকা ২৮টি গাছ চুরির সম্ভাবনা থাকায় সেগুলি কেটে সরিয়ে নেবেন ঠিকাদার। বাকি গাছ বন দফতরের বৈধ অনুমতির আগে কাটা যাবে না। সে ক্ষেত্রে কিছু বেশি গাছ কেটে অনিয়ম হয়েছে।”

স্বপনের দাবি, গাছের অগ্রিম হিসেবে ইতিমধ্যে ৪০ হাজার জমা দিয়েছেন ঠিকাদার। সেই টাকার ২০ হাজার টাকা পঞ্চায়েতে জমা করতে রসিদ কাটা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির উন্নয়ন সংক্রান্ত তহবিলে দেড় হাজার টাকা জমা পড়েছে। বাকি সাড়ে ১৮ হাজার টাকা মহাদেব সাহানার কাছে আছে। সেটাও পঞ্চায়েতে জমা পড়বে। মহাদেবের বক্তব্য, “গাছ নিয়ে কোনও বেআইনি কাজ হয়নি। আমার কাছে থাকা টাকা পঞ্চায়েতে জমা করে দেব।”

পক্ষান্তরে, উপপ্রধান প্রসেনজিতের দাবি, “গত শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত আমরা অফিসে ছিলাম। গাছ কাটা সংক্রান্ত কোনও দরপত্র ডাকা বা আলোচনা হয়নি। কোনও টাকাও জমা পড়েনি।” দরপত্র ডাকার ক্ষেত্রে মহাদেবের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রসেনজিৎ। তিনি বলেন, “আমাদের পুরো আন্ধকারে রেখেই পঞ্চায়েতের গাছ বিক্রি হচ্ছে। বিষয়টা নিয়ে আমরা প্রশাসনের নজরে এনেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন