NRS

Job: হাওড়ায় ডোমের চাকরিতে আবেদন ইতিহাসের ফার্স্ট ক্লাস স্বর্ণালির

তাঁর মতে, যাঁদের চাকরি নেই, তাঁদের তো চাকরি দরকার। তা সে যে পদই হোক না কেন। কাজের কোনও ছোট বড় হয় না বলেও মন্তব্য তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২১ ১৭:০৩
Share:

স্বর্ণালী সামন্ত। নিজস্ব চিত্র।

ইতিহাসে প্রথম শ্রেণির স্নাতক তিনি। কিন্তু সেই স্বর্ণালি সামন্তই কি না ডোম পদে চাকরিপ্রার্থী হিসাবে আবেদন করেছেন! বিষয়টি কোনও ভাবে প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রথম শ্রেণির স্নাতক ডোম পদের চাকরিপ্রার্থী! যদিও এতে বিস্ময়ের কিছু দেখছেন না হাওড়া শিবপুরের বাসিন্দা স্বর্ণালি। তাঁর মতে, যাঁদের চাকরি নেই, তাঁদের তো চাকরি দরকার। তা সে যে পদই হোক না কেন। কাজের কোনও ছোট বড় হয় না বলেও মন্তব্য তাঁর।

Advertisement

পদের নাম ল্যাব অ্যাটেনড্যান্ট বা পরীক্ষাগার সহকারী। এনআরএস হাসপাতালের তরফে গত বছর ডিসেম্বর মাসে দেওয়া হয়েছিল ‘পরীক্ষাগার সহকারী’ পদে নিয়োগের ওই বিজ্ঞাপন। নেটমাধ্যমে সেই বিজ্ঞাপনে নজর যায় শিবপুরের স্বর্ণালির। মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি ফেসবুকের মাধ্যমে এনআরএসের ওই বিজ্ঞাপনটা দেখতে পাই। তার পর আবেদন করি। আমার সিভি, সমস্ত শংসাপত্র এবং মার্কশিট নিয়োগকর্তার ঠিকানায় পাঠাই। ওখান থেকে অ্যাডমিট পাঠানো হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। গত ২১ মার্চ পরীক্ষা ছিল। তবে সেই পরীক্ষা পিছিয়ে যায় অগস্টে।’’

এত দিন পর বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হওয়ায় অবাক হয়েছেন স্বর্ণালি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে ‘পরীক্ষাগার সহকারী’ বিষয়টি না জানলেও, কিছুটা খোঁজখবর নিতেই তাঁর কাছে ওই পদ সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হয়ে যায়। স্বর্ণালির কথায়, ‘‘প্রথমে দেখেছিলাম ল্যাব অ্যাটেনন্ডেন্ট হিসাবে চাকরি। পরে জেনেছিলাম, ওটা ডোমের কাজ। কিন্তু যাঁদের চাকরি নেই, তাঁদের চাকরি দরকার। ভাল বেতন পাওয়া যাবে, এটা ভেবেই আবেদন করেছিলাম।’’

Advertisement

ডোম পদে কাজ পেলে কী করবেন? স্বর্ণালি সটান বললেন, ‘‘চাকরি পেলে কেন করব না। ডোমের পদে কাজ জেনেই আমি পরীক্ষা দিতে গিয়েছি। কোনও রকম খ্যাতির লোভে পরীক্ষা দিইনি। আমার বাড়ির লোকও এটা মেনে নেবে।’’

শিবপুরের অবিনাশ ব্যানার্জি লেনের বাপের বাড়ি স্বর্ণালির। তাঁর বিয়ে হয়েছে শিবপুরেরই অনন্ত দেব চট্টোপাধ্যায় লেনে। স্বামী দেবব্রত কর্মকার একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থায় গাড়ি চালান। শিবপুরের ভবানী গার্ল স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর দূরশিক্ষার মাধ্যমে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক হন। তিনি ডালহৌসির একটি বেসরকারি সংস্থার রিশেপশনিস্ট হিসাবে চাকরি করেন বর্তমানে। তাঁর এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। আমার পরিবারকে আমাকে দেখতে হবে। পরিবারই আমার কাছে প্রধান। ভাল বেতন দিলে কেন চাকরি করব না?’’

এনআরএস-এর ওই পরীক্ষায় শুধু স্বর্ণালিই নন, হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্নাতক ছাড়াও স্নাতকোত্তররাও আবেদন করেছে ওই পদে। আবেদন করেছেন ইঞ্জিনিয়াররাও। স্বর্ণালিও অপেক্ষায় রয়েছেন ওই চাকরির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন