চিকিৎসা করাতে আসা নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড হল হাতুড়ের। শনিবার চুঁচুড়া ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় কোর্টের বিচারক জাহাঙ্গির কবীর সরওয়ার আলি খান ওরফে মুন্না নামে ওই হাতুড়ে চিকিৎসকে এই সাজা শোনান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যার ঘটনা। নাবালিকা মেয়ের শরীর খারাপ করায় ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা এক ব্যাক্তি স্থানীয় হাতুড়ের সরওয়ার আলি খানের কাছে গিয়েছিলেন। হাতুড়ে মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের চেম্বারের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। অভিযোগ উঠেছিল, হাতুড়ে চেম্বারের দরজা বন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পরে মেয়েটির চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা চেম্বারের দরজায় ধাক্কা মারলে হাতুড়ে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে। মেয়েটি কান্নাকাটি করছিল। পরিবারের লোকেরা জিজ্ঞসাবাদ করে জানতে পারেন, চিকিৎসা করার নামে মুন্না তাকে ধর্ষণ করেছে। ভদ্রেশ্বর থানায় তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত হাতুড়েকে গ্রেফতার করে।
নাবালিকার পরিবারের আরও অভিযোগ, প্রায় ৪ মাস জেল হাজতের পরে জামিন পায় মুন্না। এলাকায় ফিরে তার ঘনিষ্ঠদের দিয়ে ওই হাতুড়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মেয়েটির পরিবারকে হুমকি দিচ্ছিল। কোনও উপায় না পেয়ে মেয়েটির পরিবার ভদ্রেশ্বরের বাড়ি ছেড়ে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে বসবাস করতে শুরু করেন। সরকারি পক্ষের আইনজীবী কালীপ্রসাদ সিংহরায় জানান, ৫ বছর পরে সাজা হল। ১৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১৮ নভেম্বর বিচারক সরওয়ার আলি খানকে দোষী সাব্যস্ত করেন। শনিবার সাজা ঘোষণা করা হয়। ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০০০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ২ বছর কারাদণ্ড হয়।
এ দিন আদালতে হাজির থাকা ভদ্রেশ্বরের ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সাজাপ্রাপ্তের চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও ডিগ্রি ছিল না। শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা দিয়ে রোগী দেখত। এই রায়ে খুশি নিগৃহীত মেয়েটির মা। যদিও সরওয়ার আলি খান দাবি করে, ভদ্রেশ্বরের ওই এলাকার একটি ঘটনায় তিনি সরব হয়েছিলেন। তাই তাকে ফাঁসানো হয়েছে।