নীল-সাদা টি-শার্ট আর কালো ট্রাউজার্স। বুকে সাঁটা হাওড়া পুরসভার লোগো।
পুজোর আগেই এই পোশাকে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীকে দেখা যাবে হাওড়া শহরের অলিগলিতে, যাঁদের কাজ হবে মূলত নাগরিক পরিষেবায় নজরদারি। পাশাপাশি, মণ্ডপে বা রাস্তায় পুজোর ভিড় সামলাতেও দেখা যাবে এই বাহিনীকে। এঁদের নাম ‘মেয়র্স কপ’, সোজা কথায় মেয়রের নজরদার বাহিনী।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ওই বাহিনীর ১৪৭ জনের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষ। এ বার শুধু কাজে যোগ দেওয়ার অপেক্ষা। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের মধ্যেই এই বাহিনীর প্রধান হিসেবে কোনও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার বা সেনাবাহিনীর অফিসারকে নেওয়া হবে। তিনিই হাওড়া সিটি পুলিশের রিজার্ভ ইনস্পেক্টরের সঙ্গে পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দলকে পরিচালনা করবেন।
পুরসভার খবর, মাস দু’য়েক আগে মেয়র রথীন চক্রবর্তী মুম্বইয়ের মতো হাওড়ায় এই ‘মেয়র্স কপ’ দল চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো হাওড়া পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ড থেকে ১৪৭ জনকে চাকরিতে নেওয়া হয়। পুরসভার অনুরোধে হাওড়া সিটি পুলিশের রিজার্ভ ইনস্পেক্টর বাসুদেব খান এই তরুণ-তরুণীদের হাওড়া পুলিশ লাইনের মাঠে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেন। এ বিষয়ে বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘মূলত পুলিশের প্রাথমিক পর্বের যে প্রশিক্ষণ হয়, তা-ই দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ট্রাফিক সামলানো বা নাগরিক পরিষেবার ক্ষেত্রে কী কী নজরদারি করা দরকার, তা শেখানো হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাহিনীর অফিস করা হচ্ছে পুরভবনেই। সেখান থেকেই বাহিনীকে পরিচালনা করবেন বাহিনীর প্রধান। পুরসভার সাতটি বরোয় বাহিনীর কর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়মিত রিপোর্ট দেবে। সেখান থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরে সিদ্ধান্ত নেবেন বাহিনীর প্রধান।
হাওড়া পুরসভার মেয়র বলেন, ‘‘এই বাহিনী গড়ার মূল লক্ষ্য শহরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখা। সেই সঙ্গে নাগরিকদের কর্তব্যবোধ বাড়াতে সাহায্য করা। আশা করা যায়, এই ‘মেয়র্স কপ’ আগামী দিনে রাজ্যের কাছে একটা মডেল হয়ে উঠবে।’’
কী কী কাজ করবে এই বাহিনী?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাহিনী বিভিন্ন পুর-ওয়ার্ডে ঘুরে যে বিষয়গুলির উপরে নজরাদারি করবে, সেগুলি হল: ১) শহরের যান চলাচল এবং কোনও অ্যাম্বুল্যান্স যানজটে আটকে থাকলে তাকে দ্রুত বার করতে ট্রাফিক পুলিশকে সাহায্য করা। ২) মেয়েদের স্কুল-কলেজের সামনে ইভ-টিজিং হচ্ছে কি না দেখা। ৩) রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে কি না লক্ষ রাখা। ৪) রাস্তার আলো জ্বলছে কি না দেখা। ৫) নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে তা অবিলম্বে পুরসভার নজরে আনা। ৬) শহরের বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যানের উপরে নজর রাখা। ৭) শহরের ভ্যাটের অবস্থা নিয়ে দৈনন্দিন রিপোর্ট দেওয়া এবং কোথাও রাস্তা আটকে পুজো বা অনুষ্ঠান হচ্ছে কি না দেখা।