World Handicap day

বিদেশে খেলায় সাফল্য, পুরস্কৃত প্রতিবন্ধী দিবসে

বৃহস্পতিবার, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে রাজ্য সরকারের তরফে রহিম মল্লিক, সুফিয়া খাতুন এবং শ্রাবন্তী বাগ নামে ওই তিন জনকে পুরস্কৃত করা হল।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২২
Share:

শ্রাবন্তী, রহিম ও সুফিয়া (বাঁ দিক থেকে)। —নিজস্ব চিত্র

ওঁরা তিন জন বিশেষ মানসিক চাহিদাসম্পন্ন। কারও বাবা ভবঘুরে, কারও বাবা ছোটখাটো কাজ করেন, কারও বাবা দিনমজুর। প্রত্যেকেরই সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। নিজেদের মানসিক সমস্যা, কঠিন পারিবারিক অবস্থা— কোনও কিছুই অবশ্য হুগলির ওই তিন তরুণ-তরুণীকে টলাতে পারেনি। খেলাধুলোয় দেশের জন্য সম্মান কুড়িয়ে এনেছেন তাঁরা বিদেশের মাটি থেকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে রাজ্য সরকারের তরফে রহিম মল্লিক, সুফিয়া খাতুন এবং শ্রাবন্তী বাগ নামে ওই তিন জনকে পুরস্কৃত করা হল।

শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে এক অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে ট্রফি তুলে দেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান কলকাতাতেই আয়োজন করা হচ্ছিল। এ বার করোনা পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট জেলায় করা হয়েছে।

Advertisement

তিন জনেই শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুরে ‘বাঁশাই প্রচেষ্টা’ নামে একটি সংগঠনের শিক্ষার্থী। এখানে তাঁরা বৃত্তিমূলক শিক্ষার পাঠ নেন। পাপোষ এবং ঠোঙা তৈরি করেন। পাশাপাশি চলে খেলাধুলোর চর্চা। ২০১৭ সালে অষ্ট্রিয়ায় শীতকালীন স্পেশাল অলিম্পিক গেমসে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁরা। ফ্লোর হকিতে ছেলেদের সোনাজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ডানকুনির খড়িয়ালের বাসিন্দা রহিম। ওই প্রতিযোগিতায় মেয়েদের দল ফ্লোর হকিতে তৃতীয় হয়। সুফিয়া এবং শ্রাবন্তী ব্রোঞ্জজয়ী ওই দলে ছিলেন।

সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁরা পুরস্কার পাওয়ায় ‘বাঁশাই প্রচেষ্টা’ কর্তৃপক্ষ খুশি। প্রধান শিক্ষক সুবীর ঘোষ জানান, তেইশ বছরের সুফিয়ার বাড়ি রিষড়া পঞ্চায়েতের পাঁচলকিতে। তাঁর বাবা ভবঘুরে। মা মারা গিয়েছেন ছেলেবে‌লায়। সুফিয়া থাকেন পিসির কাছে। রহিমের বয়স ২২ বছর। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন মল্লিক দিনমজুর। মা মাবিয়া বিবি গৃহবধূ। শ্রাবন্তীর বাবা কেনারাম বাগ রাজমিস্ত্রি। মা ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের শ্রমিক।

সুবীরবাবু এবং স্কুলের সভাপতি সন্ধ্যা চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রহিম, সুফিয়া এবং শ্রাবন্তী— কারও বুদ্ধির বিকাশ পুরোপুরি হয়নি। তবে, নিজেদের কাজটুকু ওঁরা মন দিয়ে করেন। খেলার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারাতে চেষ্টার কসুর করেন না। তাতেই সাফল্য এসেছে। সুবীরবাবুর কথায়, ‘‘ওদের জন্য আমরা গর্বিত। আশা করব ভবিষ্যতেও যাবতীয় প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে ওঁরা আরও সফল হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন