সাড়ে ছ’লক্ষে জাল শংসাপত্র

বুধবার ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ৪ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৪১
Share:

জালে: ধৃত তরুণকুমার চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

জাল নিয়োগপত্র দাখিল করে স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন এক ব্যক্তি। বুধবার উত্তরপাড়া থেকে তরুণকুমার চক্রবর্তী নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নালিকুলের কিঙ্করবাটীর বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই ব্যক্তির সঙ্গে জালিয়াতির কোনও চক্রের যোগ রয়েছে। বুধবার ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ৪ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

চন্দননগর কমিশনারেটের এডিসিপি (শ্রীরামপুর) অতুল ভি জানান, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী ভাবে জাল নথি এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধৃত ব্যক্তি যা বলছেন, তা আদপে সত্যি কি না, তাও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সকালে উত্তরপাড়ার অমরেন্দ্র বিদ্যাপীঠের (বালক) প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত ভট্টাচার্যের কাছে আসেন বছর চল্লিশের তরুণবাবু। জানান, শিক্ষক হিসেবে এখানে চাকরি পেয়েছেন। ‘নিয়োগপত্র’ও জমা দেন। তবে ওই নথি দেখে সুশান্তবাবুর সন্দেহ হয়। তিনি ‘নিয়োগপত্র’টি নিজের কাছে রেখে তরুণকে পরের দিন আসতে বলেন। মঙ্গলবার ওই ব্যক্তি স্কুলে এলে প্রধান শিক্ষক পুলিশে খবর দেন। উত্তরপাড়া থানার পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় ধৃত জানিয়েছেন, নালিকুলের বাসিন্দা জনৈক অলোক দাসের মাধ্যমে তিনি ওই ‘নিয়োগপত্র’ জোগাড় করেছেন সাড়ে ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে ধৃতের জবাব, ‘‘মাস্টারি করতে এসেছিলাম। প্রাইমারি স্কুলের পরীক্ষা দিয়েছি। পাশও করি। আমার বন্ধু অলোক দাসের মাধ্যমেই নিয়োগপত্র পেয়েছি। কিন্তু এরা বলছে জাল সার্টিফিকেট। আমি জানি না।’’ সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি ওই ‘নিয়োগপত্র’ পান বলেও স্বীকার করে নেন।

কিন্তু কী করে বোঝা গেল, শংসাপত্র আসল নয়?

প্রধান শিক্ষক সুশান্তবাবু জানান, নিয়োগপত্রটি দেখে তিনি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। কারণ, এই মূহূর্তে হুগলির প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান নেই। অথচ ‘নিয়োগপত্রে’ চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর। ওই স্বাক্ষর পূর্বতন চেয়ারম্যানেরও নয়। পর্ষদের জেলা পরিদর্শকেরও নয়। তিনি ওই ‘নিয়োগপত্রের’ প্রতিলিপি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের জেলা পরিদর্শক গোপাল বিশ্বাসের কাছে পাঠান। গোপালবাবুও জানিয়ে দেন, ওই নথি ভুয়ো। এর পিছনে কোনও চক্র থাকতে পারে। তাঁর পরামর্শেই গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানান সুশান্তবাবু। সুশান্তবাবুর কথায়, ‘‘আমি জিজ্ঞাসা করায় তরুণবাবু টাকা দিয়ে ওই নথি পাওয়ার বিষয়টি বলে ফে‌লেন। শিক্ষাক্ষেত্রের সুন্দর পরিকাঠামো যেন কলুসিত না হয়, সেটাই চাই।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, দালাল চক্রের খোঁজ চলছে। অলোক ছাড়াও আরও কয়েক জনের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন