ধৃত লায়ন।—নিজস্ব চিত্র।
মালিকের বাড়িতে টাকা নিতে এসে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন এক ট্রাকচালক। গত ৪ অগস্ট চুঁচুড়ার খাদিনামোড়ে ওই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত ছিল পলাতক। মাস দুয়েক ধরে তল্লাশির পর শেষ পর্যন্ত সোমবার রাতে চুঁচুড়ার কাপাসডাঙা থেকে মনোজিৎ রায় ওরফে ছোট্টু ওরফে লায়নকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কোটেশ্বর রাও জানান, ট্রাকচালক খুনের ঘটনায় দু’জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। সোমবার মূল অভিযুক্ত লায়নও ধরা পড়েছে। ঘটনায় যুক্ত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৪ অগস্ট সকালে খাদিনামোড়ে এমজি রোডের বাসিন্দা ট্রাকের মালিক জয়ন্ত চক্রবর্তীর বাড়িতে গৌতম সেন টাকা নিতে এসেছিলেন। চুঁচুড়ার নবাববাগানের বাসিন্দা গৌতমবাবু জয়ন্তবাবুর বাড়ির গ্যারাজে বসেছিলেন। সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে হঠাৎই তাঁর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে। ঝগড়ার মধ্যেই গৌতমবাবুকে গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পুলিশ তদন্তে নামে। ১২ই আগষ্ট সিঙ্গুরের দলুইগাছা থেকে খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সুকান্তনগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মিত্র এবং কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা রথীন সিংহকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতরা খুনের কথা কবুল করে। তাদের জেরা করে বাকিদের খোঁজে তল্লাশিতে নামে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরে, ২০১৫ সালের মে মাসে হরিপালের বাসিন্দা ট্রাকচালক রতন দে নদিয়ার চাকদায় মাল নামিয়ে ফেরার পথে খুন হয়েছিলেন। সেই সময় রতনবাবুর সঙ্গে কাজ করতেন গৌতম। খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চাকদা থানার পুলিশ গৌতম-সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। পরে গৌতম রাজসাক্ষী হয়ে যান। বাকি অভিযুক্তরা জেলে থাকলেও ৬ মাস জেল খাটার পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জামিনে ছাড়া পান তিনি। ফের ট্রাক চালানো শুরু করেছিলেন। রতন দে খুনের ঘটনায় গত ৪ অগস্ট আদালতে তাঁর সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। আর সেদিনই তাঁকে খুন করা হয়। পুলিশের অনুমান, সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্যই গৌতমকে খুন করা হয়। তাদের দাবি, সোমবার ধরার পড়ার পর জেরায় লায়ন গৌতমকে খুনের কথা কবুল করেছে।