ধৃত: প্রভাত রায়। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রী ও শিশুকন্যা খুনে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল প্রভাত রায়কে বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, ধৃত প্রাথমিকভাবে খুনের কথা স্বীকার করেছে।
শনিবার সকালে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের বিস্তারিক এলাকার বাসিন্দা কনস্টেবল প্রভাত রায়ের বাড়ি থেকে স্ত্রী তনু রায় এবং ছয় বছরের মেয়ে বর্ষার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিজের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েনের জেরে এই জোড়া খুনের অভিযোগ উঠেছিল প্রভাতবাবুর বিরুদ্ধে।
নিহত মহিলার দাদা প্রদীপ ব্যাপারী, প্রভাত রায়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। প্রভাত বর্ধমান জেলা পুলিশের সদর দফতরের কর্মী। গত শুক্রবার তিনি বাড়ি এসেছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পনেরো আগে তনু-প্রভাতের বিয়ে হয়। তনুর বাপেরবাড়ি ভদ্রেশ্বরে। দম্পতির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে, বছর নয়েকের অদিতি কয়েক মাস ধরে ওই পাড়াতেই পিসির কাছে থাকে। বছর সাতেক আগে প্রভাত পুলিশে চাকরি পান। তার পর থেকে বেশির ভাগ সময় কর্মস্থলেই থাকতেন। বাড়ি ফিরে তিনি প্রায়ই স্ত্রী-মেয়েদের মারধর করতেন বলে অভিযোগ। বছর খানেক আগে প্রভাতের সঙ্গে ভদ্রেশ্বরের এক মহিলার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে পরিবারে অশান্তি চলছিল। প্রভাত অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ।
শনিবার দু’জনের দেহ মেলার পরই অভিযুক্ত প্রভাতবাবুকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। কিন্তু কোনও সন্ধান মেলেনি তাঁর। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তনুদেবীর উপর অত্যাচার করতেন। এরপর তনুদেবীর ননদ ও ননদের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হয়। জেরায় তাঁদের প্রভাতবাবুর বিষয়েও জেরা করা হয়।
তথ্য পাওয়ার পরই হুগলি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বর্ধমান জেলা পুলিশের কাছে বিবরণ দিয়ে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। এরপর সোমবার রাতে বর্ধমান থেকে প্রভাতবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।