জলে ভাসছে হাওড়া শহরও, ত্রাণে খিচুড়ি

টিকিয়াপাড়ায় স্টেশন সংলগ্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় রান্নাবান্না কার্যত বন্ধ। সেখানে খিচুড়ি বিলি করেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (পার্ক ও গার্ডেন) বিভাস হাজরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৫
Share:

জল ভেঙেই খাবারের সন্ধানে। সোমবার, হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

তিন দিনের বৃষ্টিতে কার্যত বানভাসি হল গোটা হাওড়া। কয়েকটি ওয়ার্ডে ত্রাণের ব্যবস্থাও করতে হল। হাওড়াবাসীর অভিযোগ, এ বার পাম্প লাগিয়ে জল বার করার উদ্যোগও চোখে পড়েনি। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে।

Advertisement

বৃষ্টির জেরে সোমবার সকাল থেকে জনজীবন কার্যত থমকে যায় মধ্য হাওড়ার নিচু এলাকা বলে পরিচিত পঞ্চাননতলা রোডে। পাশাপাশি কালীপদ দাস লেন, ফকিরচাঁদ মল্লিক লেন, কাঁড়ার পুকুর লেন-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বাড়ির ভিতরেও জল ঢুকে যায়। একই অবস্থা হয় টিকিয়াপাড়া স্টেশন সংলগ্ন নোনাপাড়া, বেহারাপাড়া, দশরথ ঘোষ লেন এবং বেনারস রোডের আশপাশে। এ বছরও জলবন্দি হয়ে পড়েন উত্তর হাওড়ার বামনগাছি ব্রিজের কাছে ঘোষপাড়া, মহীনাথ পোড়েল লেন, কৈবর্ত্য পাড়া লেন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা-সহ লিলুয়ার বাসিন্দারা।

টিকিয়াপাড়ায় স্টেশন সংলগ্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় রান্নাবান্না কার্যত বন্ধ। সেখানে খিচুড়ি বিলি করেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (পার্ক ও গার্ডেন) বিভাস হাজরা। বিভাসবাবু বলেন, ‘‘প্রায় ১০ হাজার মানুষ জলবন্দি। তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জল না নামা পর্যন্ত এটা চলবে।’’

Advertisement

বৃষ্টি হলে জল জমবে। সেই জল কতটা দ্রুত নামছে, সেটাই মূল বিবেচ্য। সে দিক থেকে হাওড়া যে পিছিয়ে, রাত পর্যন্ত শহরের চিত্র তাই প্রমাণ করে। বৃষ্টি কমে গেলেও অনেক ওয়ার্ডেই রাত পর্যন্ত জল নামেনি। যদিও মেয়র রথীন চক্রবর্তীর দাবি, নিকাশির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় জল জমছে। বৃষ্টি চললে সমস্যা হবে। বৃষ্টি কমলে ছ’ঘণ্টার মধ্যেই জল নেমে যাবে।’’ মেয়র জানান, পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য কন্ট্রোল রুম ও হেল্পলাইন খোলা হয়েছে। পুর-ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকদেরও পথে নামতে বলা হয়েছে।

কিন্তু এলাকাবাসী এমনকী, তৃণমূল কাউন্সিলরদেরও অভিযোগ, পুর-ইঞ্জিনিয়ার বা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কোনও কর্মীর দেখা মেলেনি। ঘোষপাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ পোড়েল বলেন, ‘‘কোনও পুর আধিকারিকের দেখা পাইনি। পাম্পও বসানো হয়নি।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘তিনটে পাম্প চেয়েছিলাম। একটা পেয়েছি। কাকে বলব? কেউ দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসেননি।’’

অভিযোগ মানতে নারাজ নিকাশি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস সেন। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকেই ইঞ্জিনিয়ারেরা পথে নেমেছেন। পাম্প বসানো হয়েছে। প্রতিটি পাম্পিং স্টেশন কাজ করছে। গঙ্গার জলস্তর উঁচু থাকায় জল বেরোতে দেরি হচ্ছে। বৃষ্টি না কমলে জল নামবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন