‘নির্মল’ হুগলিতে স্বচ্ছতা আনতে ‘সুস্বাস্থ্য’ ও ‘সাবধানতা’ লুডো

গত ২৯ সেপ্টেম্বর হুগলিকে ‘নির্মল জেলা’ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু নানা কর্মসূচি নিয়েও সার্বিক নির্মলতা বজায় রাখতে কালঘাম ছুটছে জেলা প্রশাসনের। আর তাই এ বার দু ধরনের ‘স্বাস্থ্যবিধান লুডো’ খেলার মাধ্যমে শিশুদের হাত ধরে এগোনোর অভিনব প্রয়াস নিল জেলার স্বাস্থ্যবিধান সেল।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৯
Share:

গত ২৯ সেপ্টেম্বর হুগলিকে ‘নির্মল জেলা’ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু নানা কর্মসূচি নিয়েও সার্বিক নির্মলতা বজায় রাখতে কালঘাম ছুটছে জেলা প্রশাসনের। আর তাই এ বার দু ধরনের ‘স্বাস্থ্যবিধান লুডো’ খেলার মাধ্যমে শিশুদের হাত ধরে এগোনোর অভিনব প্রয়াস নিল জেলার স্বাস্থ্যবিধান সেল। ওই দুই প্রকার লুডো হল ‘সুস্বাস্থ্য’ এবং ‘সাবধানতা’।

Advertisement

প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তর থেকেই ছাত্রছাত্রীদের স্বচ্ছতা সংক্রান্ত ভিত গড়ে তুলতে লুডো ছাড়াও থাকছে স্বাস্থ্যবিধান সংক্রান্ত ছবির সঙ্গে বাক্য মেলানোর খেলা এবং চক্র চার্ট। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত হুগলির অতিরিক্ত জেলা শাসক (জেলা পরিষদ) শ্রাবণী ধর বলেন, “শিশুরা খেলার ছলে যাতে তাদের জ্ঞান ও সচেতনতার মাধ্যমে সু-অভ্যাসগুলি গড়ে তুলতে পারে সে জন্যই এই উদ্যোগ। পাশপাশি তারা যাতে নিজের বাড়িতে এবং এলাকায় সেই বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে সেই মতো শিক্ষণীয় খেলার সরঞ্জাম বানিয়ে জেলার সমস্ত গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পাঠানো হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, এর ফলে সার্বিক নির্মলতার ক্ষেত্রে শিশুরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। হুগলির এই মডেল সারা রাজ্যেই গ্রহণযোগ্য হবে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, হুগলি ছাড়া নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে নির্মল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্মল জেলার দাবি যথার্থ কিনা তা এখনও যাচাই করা হয়নি কেন্দ্রীয় স্তরে। স্বভাবতই হুগলিতে নির্মলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে সামগ্রিক স্বচ্ছতার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি গ্রামে বিশেষ গ্রাম সভা ডেকে সংশ্লিষ্ট গ্রামটির ‘পরিচ্ছন্নতা সূচক’ এবং ‘কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সূচক’ তৈরি-সহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা এবং খোলা আকাশের নীচে মলত্যাগ করার অভিযোগ উঠছে। সে সব বন্ধ করতেই এই নয়া কর্মসূচি।

Advertisement

গত ১২ এপ্রিল প্রতিটি ব্লক এবং সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠিয়ে এই সংক্রান্ত সরঞ্জাম ব্যাগ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে প্রতিদিন শিক্ষক শিক্ষিকারা শ্রেণিভিত্তিক সুবিধামত সময়ে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের হাতেকলমে দেখিয়ে আলোচনা করবেন। খেলার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা মজা পাবে। এর প্রতি আকর্ষণ বাড়বে ও সচেতন হয়ে সমাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।

কেমন সেই শিক্ষণীয় সরঞ্জাম?

সুস্বাস্থ্য লুডো এবং সাবধানতা লুডো খেলার ছকের পিছনে সাপ ও মই আছে। সুস্বাস্থ্য লুডোতে যেমন ১ থেকে ১০০ ঘরে পৌঁছতে ৫ দান পড়লেই দেখা যাবে সেই ঘরে লেখা আছে ‘প্রত্যহ নিয়মিত দাঁত মাজলে’ মই বেয়ে একেবারে ৪৩ ঘরে চলে যাবে। যেখানে লেখা আছে ‘দাঁত মজবুত হয়। হজম শক্তি ঠিক থাকে ও মুখে দুর্গন্ধ হয় না’। আবার এই লুডোরই ৯৯ ঘরে গেলে একবারে সাপের মুখে পড়ে ৫৬ ঘরে নেমে আসতে হবে। ৯৯ ঘরে লেখা ‘হাঁচি বা কাশির সময় মুখে রুমাল চাপা না দিলে’ এবং ৫৬ ঘরে লেখা ‘হাঁচি বা কাশির মধ্য দিয়ে রোগজীবাণু অন্য সুস্থ লোকের শরীরে প্রবেশ করে’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন