তৈরির দু’মাস পরেই বেহাল রাস্তা, বিক্ষোভ

মাত্র দু’মাস আগেই তৈরি হয়েছে ওই রাস্তা। কিন্তু দেখে রাস্তার অস্তিত্ব বোঝার উপায় নেই। জল জমে রাস্তাই এখন কার্যত নালা কিংবা ডোবার চেহারা নিয়েছে। তার উপর দিয়েই দুলকি চালে বিপজ্জনক ভাবে চলছে ভারী লরি। তার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০০:১১
Share:

উধাও: রাস্তার জায়গায় কেবল মাটি। শনিবার, বালিতে। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি হতেই বেরিয়ে এল রাস্তার কঙ্কাল!

Advertisement

মাত্র দু’মাস আগেই তৈরি হয়েছে ওই রাস্তা। কিন্তু দেখে রাস্তার অস্তিত্ব বোঝার উপায় নেই। জল জমে রাস্তাই এখন কার্যত নালা কিংবা ডোবার চেহারা নিয়েছে। তার উপর দিয়েই দুলকি চালে বিপজ্জনক ভাবে চলছে ভারী লরি। তার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।

এই অবস্থা হাওড়া পুরসভার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের বালির শ্রীচরণ সরণির। কেন এই বেহাল অবস্থা, সেই প্রশ্ন তুলে শনিবার ভোর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়েরা। বাঁশ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয় লরি ও অন্য যান চলাচল। অভিযোগ, পরিস্থিতির কথা জেনেও আসেননি স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বেবি জানা। যদিও কাউন্সিলর বলেন, ‘‘আমি কি সবাইকে দেখিয়ে ঘুরব! সকালেই সব দেখে এসেছি। এটা বদনাম করতে বলা হচ্ছে।’’

Advertisement

শুধু বালিখাল থেকে বালি স্টেশন পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার শ্রীচরণ সরণিই নয়, ওই ওয়ার্ডেরই বালিখাল থেকে জেটিয়া ঘাট পর্যন্ত ওল্ড জি টি রোডেরও একই হাল। মাস দুয়েক আগেই দু’টি রাস্তা কয়েক লক্ষ টাকা খরচে তৈরি করেছে পুরসভা। প্রশ্ন হল, তৈরির পরেই কি করে রাস্তা ভেঙে যায়? বাসিন্দাদের প্রশ্ন, তা হলে কি গোড়াতেই গলদ ছিল? অভিযোগ মানতে রাজি নন বেবিদেবী। তাঁর দাবি, ‘‘কাজে গলদ নেই। জলপ্রকল্পের কাজ ঠিক মতো হয়নি বলেই এই অবস্থা। বারবার বলা হয়েছিল, ওই কাজ ঠিক মতো না হওয়ার আগে রাস্তা করলে ভেঙে যাবে। কিন্তু স্থানীয়দের চাপেই তো কাজ করতে হয়েছে।’’

জেটিয়া ঘাটে তৈরি নতুন জলপ্রকল্প থেকে বালির গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য বছর খানেক আগে ওই দু’টি রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল। তার পর থেকেই রাস্তা এবড়ো-খেবড়ো হয়ে পড়ে ছিল। শ্রীচরণ সরণি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বলেই পরিচিত। স্কুল পড়ুয়া, অফিস যাত্রী, জুট মিলের শ্রমিক, স্থানীয় পাড়া ও পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মিলিয়ে প্রতি দিন গড়ে কয়েক হাজার মানুষ ওই রাস্তা ব্যবহার করেন। অসংখ্য ভারী লরিও যাতায়াত করে। অনেক টালবাহানার পরে গত মে মাসে শ্রীচরণ সরণি এবং ওল্ড জি টি রোডে ইট, খোয়া, স্টোন চিপ ও বিটুমিনের আস্তরণ দিয়ে নতুন রাস্তা তৈরি করে পুরসভা। স্থানীয় বাসিন্দা তাপসী রায় বলেন, ‘‘কী এমন রাস্তা বানানো হল যা দু’মাসও টিকলো না। তৈরির পনেরো দিনের মধ্যেই রাস্তা ফেটে আরও গর্ত হতে শুরু করে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা শৈলেন দাস বলেন, ‘‘গর্তে পড়ে টাল না সামলাতে পেরে লরি এক দিন আমার বাড়ির দোতলার বারান্দায় ধাক্কা মারল। যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ দিন পনেরো আগেও বাসিন্দারা বেহাল রাস্তার প্রতিবাদে অবরোধ করেছিলেন। তাতে কিছু না হওয়ায় ফের এ দিন বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ছায়া রায় নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন ‘‘আমাদের কি প্রাণের দাম নেই! কাউন্সিলর দেখতেও আসেন না। আজ বিধায়ককে জানিয়েছি।’’ এ দিন রাস্তা দেখতে যান বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তিনি বলেন, ‘‘যে ঠিকাদার এত নিম্নমানের রাস্তা করেন, তাঁকে কোনও কাজ দেওয়া উচিত নয়। রাস্তার ধারে নিকাশি নালাও নেই। ওটা আগে করা দরকার। বিষয়টি দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন