ফের তোলা দাবি, বন্ধ রাস্তার কাজ

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পরে রাজ্য জুড়ে তোলাবাজি বন্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোলাবাজির অভিযোগে বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারও হয়েছেন।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৬ ০২:০৫
Share:

নয়াচক থেকে মালঞ্চবেড়িয়া পর্যন্ত এই রাস্তা নিয়ে বিতর্ক। ছবি: সুব্রত জানা।

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পরে রাজ্য জুড়ে তোলাবাজি বন্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোলাবাজির অভিযোগে বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারও হয়েছেন। কিন্তু গ্রামস্তরে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা কতটা পৌঁছেছে, সেই প্রশ্ন উঠে গেল উলুবেড়িয়ার জোয়ারগড়ি পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে একটি নির্মীয়মাণ রাস্তার গুণগত মান নিয়ে গ্রামবাসীদের আপত্তি ছিলই। সেই ক্ষোভকে হাতিয়ার করে শাসক দলেরই একাংশ তোলা চায় এবং তা না পেয়ে বৃহস্পতিবার কাজ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ তুলল ঠিকাদার সংস্থা। শুক্রবারেও কাজ চালু হয়নি।

Advertisement

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগটিকে তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে, উলুবেড়িয়া-২ এর বিডিও দেবব্রত রায় বলেন, ‘‘কাজের গুণগত মান নিয়ে গ্রামবাসীদের আপত্তি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমাদের কানে এসেছে। একই সঙ্গে ঠিকা সংস্থার থেকে তোলা চাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঠিক কোন ঘটনার জন্য কাজটি বন্ধ হল, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’’

ওই ঠিকা সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এ নিয়ে তাঁরা থানাতেও অভিযোগ জানাননি। জোয়ারগড়ি অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি বিবেকানন্দ সিংহ বলেন, ‘‘ঠিকা সংস্থা কাজের গুণগত মান বজায় রাখতে পারেনি বলে গ্রামবাসীরাই বিক্ষোভ দেখান। অথচ, দলের নেতাদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলে ওরা কাজ বন্ধের আসল কারণটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিল।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের মধুবাটি এলাকায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পিচরাস্তাটি তৈরি হচ্ছে এক বছর ধরে। রাস্তাটি যে এলাকা দিয়ে হচ্ছে, সেটি ৯ নম্বর গ্রাম সংসদের অধীন। এ দিন বেলা ৯টা নাগাদ ওই সংসদের এক তৃণমূল নেতা দুই সঙ্গীকে নিয়ে ঠিকা সংস্থার কর্তাদের কাছে যান। কাজের গুণমান নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন। এর পরেই তাঁরা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ। ঠিকা সংস্থার আধিকারিকেরা সেই টাকা দিতে রাজি হননি। সে জন্য তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করা হয় এবং কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গোলমালের কথা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ব্লক অফিসে জানানো হয়। শুক্রবার ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। বিডিও নিজেও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে হাজির হন।

যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠেছে, তাঁর সঙ্গে মোবাইলে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি এসএমএসেরও উত্তর দেননি। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য মনে করছেন, ওই কাজের গুণমান নিয়ে এর আগেও একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে। তারই সুযোগ নিয়েছে তোলাবাজরা।

‘অসৎ’ হলে নিজের দলের কাউকেই যে রেয়াত করবেন না, দলের সর্বস্তরে সেই বার্তা ইতিমধ্যেই পৌঁছে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন দেখার, ব্লক প্রশাসনের তদন্তে কোন সত্য সামনে আসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন