ফের জ্বরে আক্রান্তের মৃত্যু, নির্বিকার বৈদ্যবাটি পুরসভা

শ্রীরামপুর মহকুমায় ফের জ্বরে আক্রান্ত এক বৃদ্ধার মৃত্যু হল। এ বার লাগোয়া বৈদ্যবাটি পুর এলাকায়।অন্তত এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভোগার পরে বৈদ্যবাটি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পম্পানগরে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হল। মৃতার নাম লীলাবতী সাউ (৬৫)। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বৈদ্যবাটি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫৭
Share:

শ্রীরামপুর মহকুমায় ফের জ্বরে আক্রান্ত এক বৃদ্ধার মৃত্যু হল। এ বার লাগোয়া বৈদ্যবাটি পুর এলাকায়।
অন্তত এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভোগার পরে বৈদ্যবাটি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পম্পানগরে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হল। মৃতার নাম লীলাবতী সাউ (৬৫)। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
মৃতার বাড়ির লোকজনের দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েই লীলাবতীদেবীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও, মৃত্যু সংশাপত্রে চিকিৎসক লিভারে সংক্রমণের (অ্যাকিউট লিভার ফেইলইওর) কথা লিখেছেন।
এর আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শ্রীরামপুর শহরে তিন জন মারা যান। দু’জনের ক্ষেত্রে ডেঙ্গির কথা উড়িয়ে দেয় প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতর। আর দিন কয়েক আগে শ্রীরামপুরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক যুবকের মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে পুরকর্তারা মেনে না নিলেও পরে ডেঙ্গিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে স্বীকার করেন। এর আগে বৈদ্যবাটিতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সেই সময় সরকারি হাসপাতালে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে শিশুটি মারা যায় বলে অভিযোগ ওঠে।
লীলাদেবীর পরিবারের লোকজন জানান, গত ১৫ অগস্ট তাঁর জ্বর হয়। প্রথমে তাঁকে শ্রীরামপুরে পুরসভার ফিভার ক্লিনিকে দেখানো হয়। তাতে জ্বর না কমায় ১৮ তারিখে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। লীলাবতীদেবীর নাতি রাহুল সাউয়ের দাবি, পরের দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হাসপাতালের তরফে তাঁদের জানানো হয়, ঠাকুমার ডেঙ্গি হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। ওয়ালশ থেকে ওই রাতেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
রাহুল বলেন,‘‘ঠাকুমার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হয়েছিল। রক্ত-পায়খানা হচ্ছিল। কিছু খেতেও পারছিলেন না।’’ মঙ্গলবার সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ ওই হাসপাতালেই লীলাবতীদেবী মারা যান। রাহুলের বক্তব্য, ‘‘যত সমস্যা ডেঙ্গির কারণেই হয়েছে।’’
কলকাতায় গত ২০ তারিখে লীলাদেবীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে অবশ্য ডেঙ্গি ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ল্যাবরেটরির তরফে দিন কয়েক পরে ফের একটি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই পরীক্ষার আগেই অবশ্য তিনি মারা যান।
এ দিকে, ডেঙ্গি মোকাবিলায় তৃণমূল পরিচালিত বৈদ্যবাটি পুরসভা উদাসিন বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। পুরসভাকে ডেঙ্গি মোকাবিলায় উদ্যোগী হতে হবে, এই দাবিতে সোমবার সিপিএমের যুব ও ছাত্র সংগঠনের তরফে পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইনকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। গত দু’মাস ধরে শ্রীরামপুর পুর-এলাকায় ডেঙ্গি বিপজ্জনক আকার ধারণ করে। বৈদ্যবাটি পুর-এলাকার নাগরিকদের একাংশের অভিযোগ, পাশের শহরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে যতটা সক্রিয় হওয়া উচিৎ ছিল, বৈদ্যবাটি পুর-কর্তৃপক্ষ তা হয়নি। যেহেতু কাছাকাছি এলাকা তাই শ্রীরামপুরের লাগোয়া শেওড়াফুলি এবং বৈদ্যবাটীতেও ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। স্থানীয় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন,‘‘যত্রতত্র আবর্জনা। জমা জল। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কোনও চেষ্টাই পুরসভার নেই। পরিস্কার শুধু মুখে হচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে এসি মেশিন, ফুলের টবে জমা পরিস্কার জলও ডেঙ্গি বাহক মশার নিশ্চিত বাসা। ফলে ডেঙ্গি ছড়িয়েছে।’’
পুরপ্রধান অরিন্দমবাবু অবশ্য অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি,‘‘ডেঙ্গি যাতে না ছড়ায়, সে ব্যাপারে পুরসভার তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মশার লার্ভা মারার জন্য তেল ছড়ানো হচ্ছে। ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার কাজও চলছে।’’
পুরপ্রধান যাই দাবি করুন, সাধারণ মানুষ কিন্তু পুরকর্তাদের দিকেই আঙুল তুলছেন এলাকায় জ্বরে এ পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায়।
স্মারকলিপি। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে নিম্ন মানের ইমারতি দ্রব্য দিয়ে শৌচাগার তৈরি হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পান্ডুয়ার বিডিওকে স্মারকলিপি দিল তৃণমূল। খন্যান এলাকায় ঘটনা। নৈপুকুর ক্যানালপাড়, দক্ষিণপাড়া, পণ্ডিতপাড়ার বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, নির্মল বাংলা প্রকল্পে শৌচাগার তৈরির জন্য তাদের কাছে ইট, বালি ও টাকা দাবি করছে ঠিকাদাররা। না দিলে শৌচাগারের কাজ করছে না। পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু সরকার বলেন, ‘‘এটা তো সরকারি প্রজেক্ট। আমরা এই বিষয় বিডিও সমস্ত কিছু জানিয়েছি।’’ বিডিও গৌরাঙ্গ ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন