লণ্ডভণ্ড ঘর। চুঁচুড়ায় তাপস ঘোষের ছবি।
জেলা পুলিশ-প্রশাসন নাগাড়ে টহলদারির দাবি করলেও তা যে তেমন কাজে আসছে না ফের তার প্রমাণ মিলল। সোমবার রাতেই হুগলির পান্ডুয়া ও চুঁচুড়ায় আবার ডাকাতির ঘটনা ঘটল।
চুঁচুড়ায় বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে দরজার তালা ভেঙে সর্বস্ব লুঠ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পান্ডুয়ায় দুষ্কৃতীরা প্রথমে বাড়িতে ঢুকে হামলা চালালেও বাড়ির লোকের চিৎকারে প্রতিবেশীর ছুটে এলে বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় তারা।
গত ২৭ অগস্ট কোন্নগরে ডাকাতি করতে এসে বৃদ্ধাকে ধর্ষণ, মারধর। ২ সেপ্টেম্বর চন্দননগরের মহাডাঙা কলোনিতে আলোর ব্যবসায়ীকে খুন, পর পর ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ, দুষ্কৃতী দমনে কার্যত দিশাহার পুলিশ। তাই একের পর এক এমন ঘটনা ঘটছে। যদিও জেলার এক পুলিশ কর্তা জানান, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছেই। এ ক্ষেত্রেও দুষ্কৃতীদের খোঁজে জোর তল্লাশি চলানো হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চুঁচুড়ার নবাববাগান এলাকার বাসিন্দা কুণাল দাস রবিবার পরিবার নিয়ে মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলেন। দোতলা বাড়ির সর্বত্র তালা ছিল। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি ফিরে সদর দরজার তালা খুলতে গিয়ে তিনি দেখেন দরজা খোলা। তালা মাটিতে পড়ে। বাড়িতে ঢুকে দেখতে পান দুটো ঘরের তিনটি আলমারি খোলা। জিনিসপত্র লন্ডভন্ড। তাঁর চিৎকারে বাসিন্দারা ছুটে আসেন। প্রতিবেশীদের দাবি, ঘনবসতি এলাকা হলেও কোনওরকম আওয়াজ তাঁরা পাননি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান রাতের অন্ধকারে বৃষ্টি পড়ায় প্রায় প্রত্যেক বাড়ির জানালা দরজা বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কুণালবাবুর দাবি, দুষ্কৃতীরা তিনটি আলমারিতে রাখা সোনার গয়না, নগদ হাজার দশেক টাকা এবং একটি দামি ক্যামেরা সহ বেশ কিছু দামি জামাকাপড়ও নিয়ে গিয়েছে।
ওই রাতেই পান্ডুয়ার পোটবা এলাকায় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি করতে আসে জনা চারেক দুষ্কৃতী। শৈলেন সাঁতরা নামে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ওই দিন সন্ধ্যায় বৈঁচিতে সোনার দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে বাজারে যাব বলে বেরোচ্ছিলাম। হঠাৎই চার দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে পড়ে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চায়। আমাদের প্রাণে না মারার আর্জি জানিয়ে ওদের হাতে চাবি তুলে দিই। আমার কাছে থাকা হাজার তিনেক টাকাও দিয়ে দিই।’’ হামলার সময়েই কোনওরকমে শৈলেনবাবুর স্ত্রী পিছনের দরজা দিয়ে বাইরে গিয়ে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকারে ছুটে আসেন পাড়ার লোকজন। বেগতিক দেখে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বোমাও ছোড়ে। যদিও তাতে কেউ হতাহত হননি বলে পুলিশ জানিয়েছে।