ফার্মাসিস্ট, নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পদ শূন্য। আছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। তাও সপ্তাহে সব দিন তিনি আসেন না। আর রয়েছেন কয়েকজন সেবাকর্মী। এমনই ছবি চেঙ্গাইল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
উলুবেড়িয়া পুরসভার অন্তর্গত চেঙ্গাইল এলাকার লোকেদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি করেছিলেন পুরকর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরিকাঠামো সেই তিমিরে। ফলে যথাযথ পরিষেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। সামান্য জ্বর-জ্বালা, কাটা-ছেঁড়ার চিকিৎসা করাতে বেশিরভাগ সময় ছুটতে হচ্ছে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল বা ইএসআই হাসপাতালেই।
স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সাল নাগাদ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি হয়। সেই সময় শুধু মা ও প্রসূতিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত পরামর্শ ও শিশুদের টিকাকরণ করা হতো। ২০১২-’১৩ সাল নাগাদ ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশন প্রকল্পে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বহির্বিভাগ চালু করার পরিকল্পনা করে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু চার বছর কেটে গেলেও তার পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখানে থাকার কথা ২ জন চিকিৎসক, ১ জন ফার্মাসিস্ট, ৪ জন নার্স ও জনা দু’য়েক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কিন্তু রয়েছেন মাত্র এক জন চিকিৎসক ও কয়েকজন সেবাকর্মী। ওই সেবাকর্মীরাই ওষুধ দেওয়া থেকে শুরু করে নার্সেরও কাজ করেন। আর সপ্তাহে পাঁচ দিন আসার কথা থাকলেও, প্রায়ই নানা সরকারি কাজ থাকার কারণে সব দিন চিকিৎসক আসতে পারেন না। চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে ওই সেবাকর্মীদের চিকিৎসকের দায়িত্ব সামলাতে হয়।
বুধবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, ঝাঁ চকচকে দোতলা ভবনে জনা কয়েক রোগী বসে রয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসক নেই। সেবাকর্মীরা জানালেন, হাওড়ায় বৈঠকের কারণে এ দিন চিকিৎসক আসতে পারেননি। তা হলে রোগী দেখছেন কে? সেবাকর্মীরা জানালেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা মতো ওষুধ দিয়ে দিচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা উর্মিলা সাউ এসেছিলেন পেটের যন্ত্রণা নিয়ে। তিনি বললেন, ‘‘ডাক্তারবাবু নেই। দিদিদের (সেবাকর্মী) কাছ থেকে ওষুধ নিলাম। অনেকে আবার চিকিৎসক না থাকায় ফিরেও গেলেন।’’ আর এক বাসিন্দা আসাদুল আলি বললেন, ‘‘শুনছি তো স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উন্নতি হবে। আরও চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ হবে। কিছুই তো হচ্ছে না। কবে হবে তাও জানি না।’’
কী বলছে পুরসভা?
ভাইস চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন খান অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। শীঘ্রই সব স্বাস্থ্য কর্মীর নিয়োগ হয়ে যাবে।’’ একই বক্তব্য জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাসেরও।