অবহেলায় পড়ে রয়েছে টয় ট্রেনের কামরা। নিজস্ব চিত্র
নামেই বিনোদন পার্ক। কিন্তু বিনোদনের কিছুই নেই। রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে পোলবার সুয়াখাল বিনোদন পার্কের এখন বেহাল দশা। একে বর্ষশেষ, তার উপরে রবিবার— কিন্তু তারপরেও এ দিন পোলবায় ‘ময়ূরমহল’ বলে পরিচিত এলাকায় অবস্থিত ওই পার্কে সেভাবে ভিড় হল না। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরাও পার্কের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গেলেন।
ব্যান্ডেল স্টেশনের পশ্চিমে অবস্থিত বর্ধিষ্ণু গ্রাম রাজহাট। সেখানেই রয়েছে ওই পার্কটি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই পার্ক ও সংলগ্ন এলাকায় আগে অনেক ময়ূর আসতো। তাই এলাকাটি ‘ময়ূরমহল’ নামে পরিচিত হয়। কিন্তু কিন্তু সেসব এখন শুধুই অতীত। বিনোদন পার্কের মধ্যে সাকুল্যে দু’টি ময়ূর রয়েছে। ময়ূর দেখার ইচ্ছে নিয়ে এসে হতাশ হয়েছেন অনেকে। তবে পরিষেবা অমিল হলেও এই পার্কে ঢুকতে টিকিট লাগে।
পার্কের কর্মীরা জানালেন, আগে শীতের মরসুম শুরু হতেই এখানে ভিড় জমতো। তখন খুদেদের মনোরঞ্জনের জন্য বিভিন্ন উপকরণ ছিল এখানে। চড়ুইভাতির জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এখন সেসব কিছুই প্রায় নেই। ঘরগুলি তালা বন্ধ। অধিকাংশ ঘরে জানালার কাঁচ নেই। আগে পার্কে চলত টয় ট্রেন। এখন সেই ট্রেনের কামরাগুলি অবহেলায় এক কোণে পড়ে রয়েছে। আগে সুয়াখালে বোটিং হতো। এখন বোটগুলি পার্কের মধ্যেই উল্টে পড়ে রয়েছে। মহিলাদের শৌচাগারের ছাদে অর্ধেক চাল নেই। খুদেদের খেলার স্লিপ ভাঙাচোরা। পার্কে পর্যাপ্ত আলোও নেই। এদিক ওদিক জমে রয়েছে আবর্জনা। তার মধ্যে যেমন থার্মোকলের থালা-বাটি রয়েছে তেমনই রয়েছে মদের বোতল।
এ দিন নদিয়ার রানাঘাট থেকে এসেছিলেন সুতাপা মুখোপাধ্যায়। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘এখানে তো বিনোদনের কিছুই নেই। শুধুই রোজগারের জন্য পার্ক খুলে রাখা হয়েছে। একবার যে এখানে আসবে সে আর কোনওদিন আসতে চাইবে না।’’
পার্কটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা হুগলি জেলা পরিষদ সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহেবুব রহমান জানান, দিল্লি রোড সম্প্রসারণের জন্য সুয়াখাল পর্যটন কেন্দ্রটির সংস্কার করা হয়নি। তবে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই পার্কটির সংস্কারের জন্য রাজ্য পর্যটন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।