বেলুড়ে যুবক খুনে স্ত্রী-সহ ধৃত ২

স্ত্রী কুমকুম মালি ও তার বন্ধু রাহুল ওরফে সুমন কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আশুতোষের বুকে আঘাত করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৬
Share:

আশুতোষ মালি

বেলুড়ের নিস্কো হাউজিংয়ের আবর্জনার স্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া দগ্ধ যুবকের পরিচয় মিলল। খুন করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই যুবকের স্ত্রী ও তার এক বন্ধুকে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম আশুতোষ মালি (৩৫)। তিনি বড়বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। স্ত্রী কুমকুম মালি ও তার বন্ধু রাহুল ওরফে সুমন কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আশুতোষের বুকে আঘাত করা হয়। তার পরে অ্যালুমিনিয়ামের তার দিয়ে ওই যুবকের হাত-পা বেঁধে আবর্জনার স্তূপে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ও পরিচয় লোপাট করতে আশুতোষের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে মুখটি পোড়ানো হয়েছিল, যাতে কেউ চিনতে না পারেন।

রবিবার সকালে মৃতদেহটি উদ্ধারের পরে এলাকায় কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কি না, সে সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করে নিশ্চিন্দা থানা ও হাওড়া সিটি পুলিশ। কিন্তু কারও নিখোঁজ থাকার বিষয়ে জানা যায়নি। ওই রাতে স্থানীয় সূত্রে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে এক ভাড়া বাড়ির বাসিন্দা যুবক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। দগ্ধ যুবকের সঙ্গে আশুতোষের চেহারার মিলও পাওয়া যাচ্ছে। এর পরে রাতেই আশুতোষের বাড়িতে গিয়ে কুমকুমকে জিজ্ঞাসা করলে সে দাবি করে, ওই দিন সকাল ৬টায় কাজে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তার স্বামী। কিন্তু আশুতোষ যেখানে কাজ করেন, সেখানকার মালিকের ছেলে সকাল ৯টায় এসে জানান, ওই যুবক কাজে যাননি। এর পর থেকে আশুতোষকে মোবাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশের কাছে দাবি করে কুমকুম।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পুলিশ সূত্রের খবর, কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কি না জানতে পুলিশ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় খোঁজখবর করলেও ওই মহিলা কেন কিছু জানায়নি, তা নিয়ে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। তাই সোমবার সকালে কুমকুমকে নিশ্চিন্দা থানায় নিয়ে আসা হয়। পাশাপাশি, বড়বাজারের বাসিন্দা আশুতোষের বাবাকেও থানায় ডেকে আনা হয়। দু’জনকে এ দিন হাওড়া মর্গে নিয়ে গিয়ে দগ্ধ দেহটি দেখানো হলেও তা শনাক্ত হয়নি। তবে পুলিশ কুমকুমকে থানায় নিয়ে আসার পরেই তদন্তের স্বার্থে তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয়। সেই ফোনের কললিস্ট ঘেঁটে দেখা যায়, একটি নির্দিষ্ট নম্বরে রবিবার রাতে এবং আগেও বহু বার কথা হয়েছে। তাতেই আরও সন্দেহ বাড়ে তদন্তকারীদের।

মর্গ থেকে ফেরার পরে কুমকুমকে জেরা শুরু করেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, তখনই সে খুনের কথা স্বীকার করে। এর পরে টোপ দিয়ে একটি জায়গায় ডেকে এনে ধরা হয় রাহুলকেও। জানা গিয়েছে, সে দিল্লির বাসিন্দা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো ঘটনা জানতে এ দিন রাতেই নিশ্চিন্দা থানায় যান হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন