Dengue

ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হাওড়ায়

এলাকার বাসিন্দা উত্তম দাস বলেন, ‘‘এই এলাকার অধিকাংশ জায়গার নর্দমা পাঁকে বুজে আছে। নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় প্রতি বর্ষায় জল জমে। পুরসভা সক্রিয় হলে এলাকার এই অবস্থা হত না। পাড়ায় অনেকেরই ডেঙ্গি ধরা পড়ায় আমরা আতঙ্কিত।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৬
Share:

পিঙ্কি সোনকার

ডেঙ্গির মৃত্যু মিছিলে এ বার যোগ হল হাওড়ার এক গৃহবধূর নাম। হাওড়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পিঙ্কি সোনকার (৩৪) নামে এক মহিলা মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে ওই মহিলার মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

এর আগে নবান্নের পাড়ায় রুনু দে নামে এক মহিলার মৃত্যুর পরে হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও হাওড়ার চিকিৎসক মেয়র রথীন চক্রবর্তী দু’জনেই দাবি করেছিলেন, ওই মহিলার মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি নয়। বরং রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে গোলমাল রয়েছে। ওই মহিলার অন্য আরও রোগ ছিল।

এ দিন সালকিয়ার ঘটনায় ডেঙ্গির কথা সরাসরি অস্বীকার না করা হলেও রথীনবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ওই মহিলা ছট উপলক্ষে বিহারে গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। গত ২৮ অক্টোবর শহরে ফেরেন। তাঁর জ্বর শুরু হয় ২ তারিখ থেকে। ফলে খতিয়ে দেখতে হবে তিনি বিহারের ওই গ্রাম থেকে ডেঙ্গি নিয়ে ফিরেছিলেন কি না। তা ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। মাঝেমাঝেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হত তাঁকে। সেই কারণেও মৃত্যু হতে পারে। রথীনবাবু বলেন, ‘‘সালকিয়ায় ওই মহিলার মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়েছে কি না, তা বলার সময় এখনও আসেনি। কারণ ডেথ সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র এখনও হাতে আসেনি। সব কাগজপত্র স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দেব। সেখানে বিষয়টি দেখা হবে।’’

Advertisement

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সালকিয়ার পিঙ্কি সোনকারের শ্বশুরবাড়ির লোকজন মূলত ১৭ লম্বর শম্ভুনাথ হালদার লেনে থাকলেও বর্তমানে স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পিঙ্কি পাশেই ভৈরব ঘটক লেনের একটি ফ্ল্যাটে থাকছিলেন। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পিঙ্কির আগে ওই এলাকায় আরও কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু তার পরেও পুরসভার পক্ষ থেকে ওই এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ে কোনও অভিযান করা হয়নি। নিয়মিত দেওয়া হয়নি লার্ভিসাইড তেল। শুধু নর্দমার পাশে ব্লিচিং দিয়েই দায় সারা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা উত্তম দাস বলেন, ‘‘এই এলাকার অধিকাংশ জায়গার নর্দমা পাঁকে বুজে আছে। নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় প্রতি বর্ষায় জল জমে। পুরসভা সক্রিয় হলে এলাকার এই অবস্থা হত না। পাড়ায় অনেকেরই ডেঙ্গি ধরা পড়ায় আমরা আতঙ্কিত।’’

এ দিন সকালে ওই মহিলার মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। লোকজন এসে ভিড় করেন ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ির সামনে। মৃতার ভাই ভিকি সোনকার জানান, গত ২ তারিখ থেকে দিদির জ্বর হয়। এর পরে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে ৪ তারিখ স্থানান্তরিত করা হয় দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ভিকি বলেন, ‘‘দিদির রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। প্লেটলেট ১০ হাজারে নেমে যাওয়ায় প্লেটলেট ও ১৮ বোতল রক্ত দেওয়া হয়েছিল। কিছুই করা গেল না।’’ পরিবারের লোকজন জানান, পিঙ্কির কিডনিতে কিছুটা সমস্যা ছিল ঠিকই, কিন্তু তা থেকে মৃত্যু হয়নি। ভুল কথা রটানো হচ্ছে বলে দাবি পরিবারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন