পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। ঘটা করে লাগানো হয়েছে গুচ্ছের সিসি ক্যামেরাও। কিন্তু এ সব কোনও কাজেই আসে না আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল চত্বর এলাকায়।
স্থানীয় মানুষ এবং হাসপাতাল কর্মীদের একটা অংশের অভিযোগ, দিনের বেলায় সাইকেল, মোটরবাইক চুরির ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। আর সন্ধ্যা হলেই মদ-গাঁজা ও জুয়ার আসর বসে হাসপাতাল চত্বরে। ছিনতাই, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণেরও অভিযোগ রয়েছে। যদিও হাসপাতাল সুপার শান্তনু নন্দী দাবি করেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে অবাঞ্ছিত ঘটনার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। গোটা হাসপাতাল চত্বরে নজরদারির জন্য আমরা পুলিশের আরও বেশি করে সাহায্য চেয়েছি। আরও বেশি করে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’’
হাসপাতাল সুপারের দাবির সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সমাজ বিরোধীদের দৌরাত্ম্য তো আছেই। রোগীদের নিয়ে আসা ভাড়া গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্সের চালক ও কর্মীদের একটা অংশ নানা কুকর্মে লিপ্ত। মাস আটেক আগেই বিধায়ক তহবিল থেকে রোগী কল্যাণ সমিতিকে দান করা অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই এক তরুণীর সঙ্গে আপত্তিকর অপত্তিকর অবস্থায় দেখা গিয়েছিল একজনকে। হাতনাতে ধরা পড়ে তাকে শ্রীঘরেও যেতে হয়েছিল। আবার মাস খানেক আগেই রাতে এক রোগীর আত্মীয়াকে নির্মীয়মাণ একটি ঘরের ছাদে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে। ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক এখনও পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চালকদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা দেখা গিয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন অ্যাম্বুল্যান্স ও গাড়ি চালক সংগঠনের সম্পাদক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের মধ্যে এমন সব অপরাধ প্রবণতা দেখা গিয়েছে তাঁদের আর হাসপাতাল চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালে সংঘটিত অপরাধ দমনে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অভিযোগ করতে গেলে উল্টে আমাদের হেনস্থা করা হয়।’’
এই হাসপাতালে সমাজবিরোধী কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ সব বন্ধ করতেই রোগীকল্যাণ সমিতি বৈঠক করে গত ২০১১ সালের গোড়ায়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করার। তখন থেকেই পুলিশ ক্যাম্পে পালা করে একজন এএসআই এবং একজন কনস্টেবল থাকেন। তাতেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। আরামবাগের বিধায়ক তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তৃণমূলের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে অসামাজিক কাজ রুখতে পুলিশকে ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছি। আমরাও নজর রাখছি।’’