ধান নিয়ে ধর্না, নেতাকে ভর্ৎসনা মন্ত্রীর

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “চাষিদের অভাবী বিক্রি রুখতেই এই ব্যবস্থা। ফড়ে বা ব্যবসায়ীদের আটকাতে উপযু্ক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে কিছু কেন্দ্রে সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪১
Share:

পরিদর্শন: গৌরহাটির শিবিরে খাদ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রিকে ঘিরে অভিযোগের শেষ নেই আরামবাগে। কোথাও অভিযোগ, ভুয়ো চাষিদের ভিড়ে দাম পাচ্ছেন না অনেকে। কোথাও আবার অভিযোগ, গুণগত মান খারাপ দেখিয়ে কুইন্টাল প্রতি ৫-১০ কিলোগ্রাম বেশি ধান নেওয়া হচ্ছে মান্ডিতে। গত কয়েকদিন ধরে তাই গোঘাট, পুরশু়ড়া, আরামবাগে অশান্তি হচ্ছিল। বুধবার তেমনই অশান্তিতে ধর্নায় বসেন খোদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। আর তারপরেই পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দু’টি কিসান মান্ডি পরিদর্শন করলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Advertisement

এ দিন আরামবাগের গৌরহাটি কিসান মান্ডির শিবিরে ধান খারাপ দাবি করে কুইন্টালে ৫-১৫ কেজি পর্যন্ত ধান বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে চাষিরা বিক্ষোভ দেখান। সে বিক্ষোভে সামিল হন আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের গুণধর খাঁড়া। তিনি গামছা পেতে ধর্নায় বসেন কিছুক্ষণ। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ‘পারচেজ অফিসার’কে সেখান থেকে সরিয়ে অন্য অফিসার দিয়ে ফের ধান কেনা শুরু হয়। বিকালে খাদ্যমন্ত্রী আরামবাগ কিসান মান্ডিতে এসে বিষয়টায় সমাধান না করে ধর্নায় বসার জন্য গুণধরকে ভর্ৎসনা করেন। পাশাপাশি কিছু নির্দেশও দিয়ে যান।

পুরশুড়া ও আরামবাগের ওই দু’টি মান্ডি থেকে মন্ত্রী নির্দেশ দেন, প্রকৃত চাষিরাই ধান দেবেন। ধান ভাল না খারাপ তা নির্ধারণ করতে প্রতিটি কেন্দ্রে আর্দ্রতা নির্ধারণ করার যন্ত্র রাখতে হবে। সর্বোপরি ভুয়ো চাষিরা ধান নিয়ে এলে তাঁদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে। মন্ত্রী বলেন, “চাষিদের অভাবী বিক্রি রুখতেই এই ব্যবস্থা। ফড়ে বা ব্যবসায়ীদের আটকাতে উপযু্ক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে কিছু কেন্দ্রে সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে।”

Advertisement

ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হতেই গত ১১ নভেম্বর আরামবাগ মহকুমায় প্রথম গোলমাল হয় গোঘাটের বকুলতলা, বেঙ্গাই, কামারপুকুর এবং রঘুবাটি শিবিরে। ধানে ধুলো, অপুষ্ট ইত্যাদি অজুহাত প্রতি কুইন্টলে ৫-১৫ কিলোগ্রাম ধান বেশি দিতে হচ্ছে বলে চাষিরা অভিযোগ তোলেন। বিধায়ক মানস মজুমদার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামলান।

এরপর ২৪ নভেম্বর গোঘাটেরই মদিনার ধান ক্রয় কেন্দ্রে ভুয়ো চাষি অভিযোগে দুই চাষির ধান বোঝাই দু’টি লরি আটকে বিক্ষোভ দেখান অন্য চাষিরা। গোঘাট-১ বিডিও অনন্যা ঘোষ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন, লরি বোঝাই ধান তাঁদের নিজের নয়। সতর্ক করে, মুচলেকা লিখিয়ে ধান সমেত ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। ফের ৩ ডিসেম্বর পুরশুড়া কিসান মান্ডিতে ভুয়ো চাষি অভিযোগ এক লরি চালককে হেনস্থা করা হয়। পুরশুড়া বিডিও অচিন্ত্য ঘোষ ধান সমেত তাঁকে ফেরত পাঠান।

জেলা খাদ্য দফতর থেকে অবশ্য বলা হয়েছে “ধান কেনার সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ১৭৫০ টাকা। আইন অনুযায়ী সেই ধা ধুলো থাকবে না। আর্দ্রতা বা অপুষ্ট ধানও থাকবে না। তেমন হলে ধান কেনা হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন