সাইকেল চেপে বৃক্ষরোপণ

সম্প্রতি রসুলপুর গ্রামের উজ্জ্বল ঘোষের নেতৃত্বে ওই ১৬ জনের দলটি পুরশুড়া থেকে গাছ লাগাতে লাগাতে আরামবাগ, কামারপুকুর হয়ে বাঁকুড়ার জয়রামবাটি ঘুরে ফের পুরশুড়া ফিরল। একই সঙ্গে চলল পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা প্রচার।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

পুরশুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৮
Share:

সদলবলে: চলছে গাছ লাগানো। নিজস্ব চিত্র

শুরুতে একা ছিলেন। নতুন বছরে তিন জন। দু বছর পর এখন ১৬ জন মিলে সাইকেলে ঘুরে ঘুরে গাছ লাগাচ্ছ পুরশুড়ার রসুলপুর গ্রামের তরুণ এবং যুবকদের ওই দল।

Advertisement

সম্প্রতি রসুলপুর গ্রামের উজ্জ্বল ঘোষের নেতৃত্বে ওই ১৬ জনের দলটি পুরশুড়া থেকে গাছ লাগাতে লাগাতে আরামবাগ, কামারপুকুর হয়ে বাঁকুড়ার জয়রামবাটি ঘুরে ফের পুরশুড়া ফিরল। একই সঙ্গে চলল পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা প্রচার।

ডান হাতের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পুরশুড়া রসুলপুরের বছর ঊনত্রিশের উজ্জ্বল ঘোষ একা শুরু করেছিলেন গাছ লাগানো। গাছ মানে নিজের গ্রামে হেলায় গজিয়ে ওঠা পেয়ারা, নিম, বাবলা গাছের চারা সাইকেল বেঁধে চক্কর মারতেন পাশাপাশি এলাকায়। ব্যাগে জলের বোতল আর একদিক সুঁচালো করা গাছের ডাল। ফাঁকা রাস্তা, স্কুল চত্বর, উঠোন দেখলেই পুঁতে দিয়েছেন ওইসব গাছের চারা।

Advertisement

তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা রবীন্দ্র মহাবিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ বেকার যুবকের এই কর্মকান্ড নিয়ে কিছুদিন হাসাহাসি করেছিলেন গ্রামের মানুষ। কেউ কেউ উদ্বুদ্ধও হয়েছেন। যেমন গ্রামেরই যুবক বিলাস নন্দী এবং অমিয় পন্ডিতও একইসঙ্গে সাইকেল নিয়ে বৃক্ষরোপন অভিযানে সামিল হলেন।

দল তিনজনের হওয়ার পর তাঁদের কাজের এলাকাও বাড়ে। সাইকেলে পুরশুড়া ছাড়িয়ে আরামবাগ এবং তারকেশ্বরের বিভিন্ন গ্রামেও গাছ লাগিয়ে আসছিলেন তাঁরা। পাশে থেকেছেন অনেক গ্রামবাসীই। কেউ খাওয়ার খরচ জুগিয়েছেন, কেউ আবার টুপিও কিনে দিয়েছেন। অনেকে আবার দেবদারু, সোনাঝুরি গাছ কিনেও দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সৌম্য অধিকারী বলেন, “ছেলেগুলো ভাল কাজ করছে। ওদের সাহায্য করতে পেরে ভাল লাগছে।”

উজ্জ্বল সিভিল ডিফেন্সে বছরে তিন মাস কাজ পান। দলে রয়েছে সনাতন মোহন্ত, একাদশ শ্রেণির সৌরভ দাস, সানু দাস, কুন্তল সূর, বিএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র জ্যোতিন্দ্রনাথ সাঁতরা-এমনই এক ঝাঁক তরুণ। উজ্জ্বল বলেন, “সারা বছর যেখানে ফাঁকা জায়গা পাই, গাছ লাগিয়ে দিই। বছর দুই ধরে নিয়ম করে ২৬ জানুয়ারি সুবজায়ন এবং পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রচার করে চলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন