দৌড়: দড়ি হাতে ভোলাকে ধরতে দৌড় পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
ঝাড়া সাড়ে চার ঘণ্টা।
এ রাস্তা, সে রাস্তা, গলিঘুঁজি, কারও বাড়ির উঠোন, জলকলের মাঠ— কোথায় তার পিছনে ছুটে বেড়াননি দমকলের কর্মী থেকে পুলিশ অফিসাররা! বারেবারেই ফাঁদ কেটে পালিয়েছে ‘ভোলা’।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য দমকলের সঙ্গে ছুটোছুটি খেলায় ক্লান্ত হয়ে হার মানল সে। সন্ধ্যাবেলায় তাকে বাগে আনলেন দমকলকর্মীরা।
গত কয়েক মাস ধরে ভোলা নামে এই ষাঁড়ের তাণ্ডবে ত্রাহি রব উঠেছিল শ্রীরামপুর জুড়ে। জলকলের মোড়, ঠাকুরবাটি স্ট্রিট, কলেজ ঘাট, দে স্ট্রিট ভাগীরথী লেন, মাহেশ— সর্বত্র দাপিয়ে বেড়িয়েছে দশাসই চেহারার ষাঁড়টি। তার হানায় অন্তত ২০-২৫ জন জখম হয়েছেন। ভোলার তাড়া খেতে হয়েছে পুরসভার কাউন্সিলর থেকে গৃহবধূ, স্কুল-কলেজের পড়ুয়া— সবাইকেই। সম্প্রতি পুরসভার দুই কাউন্সিলর মিলন মুখোপাধ্যায় এবং ঝুম মুখোপাধ্যায় ষাঁড়টিকে নিরাপদ জায়গায় পাঠানোর জন্য মহকুমাশাসকের কাছে আবেদন জানান। মহকুমাশাসক রজত নন্দা বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। এর পরেই মঙ্গলবার দমকল আসরে নামে।
বেলা প্রায় আড়াই থেকে খড় রোদে দমকল কর্মীরা দড়ির ফাঁস নিয়ে ষাঁড়টির পিছু ধাওয়া করেন। পিছনে পুলিশকর্মীরা। কিন্তু ভোলাও দমবার পাত্র নয়। নাগাড়ে দৌঁড় করিছে ছেড়েছে সবাইকে। রাগে গর্জন করেছে। পা দিয়ে মাটি খুঁড়েছে, শিং দিয়ে গাছের পাতা ডলেছে।
অবশ্য সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ পঞ্চাননতলায় ভোলাকে কাবু করে ফেলেন দমকলকর্মীরা। দড়ি দিয়ে তাকে বেঁধে ফেলা হয়। পশু চিকিৎসক অর্ণব পান্ডা ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশন নিয়ে তৈরিই ছিলেন। পাঁচ মিলিলিটার ওধুধ ইঞ্জেকশনে ভরে ভোলার শরীরে দিয়ে দেন তিনি। ঘুমন্ত ভোলাকে ক্রেনে করে গাড়িতে চাপিয়ে লিলুয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। আগেও একই কায়দায় ভোলাকে ধরে দিল্লি রোডের ধারে ছেড়ে আসা হয়েছিল। কিছু দিনের মধ্যে সে ফিরে আসে। এ বার তার ঠিকান লিলুয়ার একটি বেসরকারি সংস্থা। ভোলা সেখানে যত্নেই থাকবে বলে ওই সংস্থার দাবি।