নির্দলের হয়েই প্রচারে বিধায়ক

ভোট-ময়দানে দলীয় প্রার্থী রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের ছেড়ে নির্দল প্রার্থীর হয়ে পুরোদমে প্রচারে নেমেছেন হাওড়ার এক তৃণমূল বিধায়ক এবং এক সভাপতি!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ১১:৩০
Share:

ভোট-ময়দানে দলীয় প্রার্থী রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের ছেড়ে নির্দল প্রার্থীর হয়ে পুরোদমে প্রচারে নেমেছেন হাওড়ার এক তৃণমূল বিধায়ক এবং এক সভাপতি!

Advertisement

প্রায় সব জেলাতেই দলের গোঁজ বা নির্দল-কাঁটা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তা এড়াতে হাওড়াতে দলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের ইতিমধ্যেই বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা নেতারা। কিন্তু কাজ হল কই! জগৎবল্লভপুরের ছয় নির্দল প্রার্থীর হয়ে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি বিমান চক্রবর্তীর নেতৃত্বে প্রচারে নেমে পড়ছেন দলের অনেক নেতাই। আবার সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির ৩৫ নম্বর আসনে নির্দল প্রার্থী ঝুমঝুম নস্করের হয়ে ব্যাট করছেন বিধায়ক শীতল সর্দার। এখন এই জোড়া প্রচারের ধাক্কা মোকাবিলার পথ খুঁজে চলেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

কেন দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রচার?

Advertisement

বিমানের দাবি, ‘‘যাঁদের হয়ে প্রচার করছি, তাঁরাই দলের আসল প্রার্থী। যাঁরা প্রতীক পেয়েছেন, তাঁরা অসদুপায় অবলম্বন করেছেন।’’ ঝুমঝুমেরও দাবি, ‘‘আমিই দলের আসল প্রার্থী। তাই বিধায়ক আমার হয়ে প্রচারে নেমেছেন।’’ কিন্তু সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির ওই আসনে ঝুমঝুমের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী মঞ্জু বসুর অভিযোগ, ‘‘নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করে বিধায়ক দলবিরোধী কাজ করেছেন।’’ শীতলবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

দু’জায়গার প্রচারের কথা তিনি কিছুই জানেন না দাবি করে দলের হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘সবাই দলের আদর্শ মেনে চলবেন, এটাই কাম্য। টিকিট না-পেয়ে যাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন, তাঁরা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে না-দাঁড়ালে বহিষ্কার করা হবে।’’ একই বক্তব্য দলের জেলা (সদর) সভাপতি অরূপ রায়েরও।

জগৎবল্লভপুরের যে ছয় নির্দল প্রার্থীর হয়ে বিমানবাবুরা প্রচারে নেমেছেন, তাঁদের মধ্যে চঞ্চল দাস পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে লড়ছেন। বাকি পাঁচ জন তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিমানের অভিযোগ, দলের জেলা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিমের সই করা প্রতীক বণ্টনের ফর্ম ব্লক অফিসে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, চঞ্চল-সহ ছ’জনকে প্রতীক দেওয়া হল না। বদলে অন্য ছ’জন প্রতীক পেলেন। এ ব্যাপারে তাঁদের অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। একই সুরে সাঁকরাইলের নির্দল প্রার্থী ঝুমঝুমেরও অভিযোগ, ‘‘বিধায়ক শীতলবাবু আমাকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলেছিলেন। ফিরহাদ হাকিমের সই করা ফর্মও জমা পড়েছিল। কিন্তু অসদুপায়ে অন্য একজন প্রতীক পেয়ে গেলেন।’’

জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে চঞ্চলের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ সাঁতরার দাবি, ‘‘প্রতীক চেয়ে আমরা নিজেরা ব্লক অফিসে আবেদন ক‌রিনি। ফিরহাদ হাকিমের সই করা ফর্ম ব্লক অফিসে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব বিমানবাবুরই ছিল। আমরা কেমন করে প্রতীক পেলাম, তা বিমানবাবুই বলতে পারবেন।’’

দু’টি ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে আসনগুলিতে গোলমাল, সেখানে দু’জন করে প্রার্থীর নামে ফিরহাদ হাকিমের প্রতীক বিলি সংক্রান্ত ফর্ম জমা পড়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত আইনে রয়েছে, এই ধরনের সমস্যায় যিনি আগে মনোনয়নপত্র জমা দেন, তাঁকেই প্রতীক দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই আইন মানা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন