উৎসবের রিষড়ায় জৈব শৌচাগার

পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘শৌচাগারের অভাবে বিশেষত মহিলা এবং প্রবীণদের অসুবিধায় পড়তে হত। শহরও নোংরা হত। সেই সমস্যা আর থাকবে না। এই শৌচাগার পুরোপুরি দূষণমুক্ত। ফলে শহর পরিচ্ছন্ন হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রিষড়া শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৫
Share:

জৈব শৌচাগার।—ফাইল চিত্র।

কথা রাখল রিষড়া পুরসভা।

Advertisement

এ বার জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে শহরে এলে শৌচাগারের খোঁজে হন্যে হতে হবে না। শহর জুড়ে জৈব শৌচাগার বসাচ্ছে পুরসভা। পুর-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, অন্তত ৭০টি এমন শৌচাগার বসানো হবে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জনগণের ব্যবহারের জন্য সারা বছর রেখে দেওয়া হবে। বাকিগুলি কোনও উৎসবের সময় নির্দিষ্ট জায়গায় বসানো হবে।

পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘শৌচাগারের অভাবে বিশেষত মহিলা এবং প্রবীণদের অসুবিধায় পড়তে হত। শহরও নোংরা হত। সেই সমস্যা আর থাকবে না। এই শৌচাগার পুরোপুরি দূষণমুক্ত। ফলে শহর পরিচ্ছন্ন হবে।’’ পুরপ্রধান জানান, ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে ৩৪ লক্ষ টাকায় ফাইবারের ওই জৈব শৌচাগার কেনা হয়েছে। তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের শহরে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ থাকেন। বছরভর উৎসবও লেগে থাকে। সব উৎসবেই জৈব শৌচাগার কাজে লাগবে।’’

Advertisement

রিষড়ায় জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখতে বহু মানুষ আসেন। রেল লাইনের দুই পাড় মিলিয়ে শতাধিক পুজো হয়। গত কয়েক বছর ধরে থিম পুজোর কারণে ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। বিপুল সংখ্যক মানুষের তুলনায় শৌচাগারের ব্যবস্থা কার্যত ছিল না। কয়েকটি টয়লেট কমপ্লেক্স থাকলেও পুজোর চৌহদ্দিতে তার সবক’টি পড়ে না। ফলে দর্শনার্থীদের সমস্যায় পড়তে হত। অন্ধকার বা ফাঁকা জায়গা খুঁজে পুরুষেরা দাঁড়িয়ে পড়ছেন— এটাই ছিল চেনা ছবি। অনেক জায়গা কার্যত গণ-শৌচাগারে পরিণত হত। মহিলাদের বাধ্য হয়ে আশপাশের বাড়িতে যেতে হত।

গত বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তখনই পুরপ্রধান বিজয়বাবু শহরে জৈব শৌচাগার বসানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। পুরসভা সূত্রের খবর, বাঁশতলা, বাঙ্গুর পার্ক, লেনিন মাঠ, মৈত্রী পথ, আরকে রোড, তেঁতুলতলা, শ্রীকৃষ্ণনগর নয়াবস্তি, শরৎ সরণী, মোড়পুকুর, ডক্টর বিসি রায় সরণী, বাগপাড়া, পঞ্চা‌ন‌নতলা, নতুনগ্রাম প্রভৃতি জায়গায় পুজো মণ্ডপের কাছে শৌচাগার বসানো হবে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মাস কয়েক আগে শ্রাবণী মেলার সময় জিটি রোডে পুরুষদের জন্য দু’টি এবং মহিলাদের জন্য দু’টি জৈব শৌচাগার বসানো হয়েছিল। তাতে বহু মানুষ উপকৃত হয়েছিলেন।’’

বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্মকর্তারা পুরসভার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। এক পুজো কমিটির সদস্য শুভাশিস পাকড়াশি বলেন, ‘‘পুজোর পরিকাঠামো বলতে রাস্তাঘাট, আলোর কথাই সবাই ভাবে। শৌচাগারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত ছিল। পুর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।’’ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অন্য পুজো কমিটিগুলিও। এলাকার পুজো কমিটির কর্তা অসিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে পুর কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘একটা নজির তৈরি হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন