খালে ভেঙে পড়ল রড বোঝাই ভ্যানো

সেতু বেহাল, জানতই না সেচ দফতর

ভ্যানে যাওয়ার সময় খালে ভেঙে পড়ল একটি সেতুর প্রায় অর্ধেক অংশ। ওই ভ্যানোর চালক আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে উলুবেড়িয়া সোমরুক এলাকার বোয়ালিয়া খালের উপরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২২
Share:

সেতু ভেঙে খালে ভ্যানো। — নিজস্ব চিত্র

ভ্যানে যাওয়ার সময় খালে ভেঙে পড়ল একটি সেতুর প্রায় অর্ধেক অংশ। ওই ভ্যানোর চালক আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে উলুবেড়িয়া সোমরুক এলাকার বোয়ালিয়া খালের উপরে।

Advertisement

এই ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে তপনা পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখায়। ঘণ্টাখানেক পঞ্চায়েত প্রধান-সহ অন্যান্যরা ঘেরাও হয়ে থাকেন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ভ্যানো চালককে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, সামান্য জল ছিল। সে জন্য ভ্যানো বড় ক্ষতি হয়নি। না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত। যদিও সেতুটি বেহালের কথা জানা ছিল না বলে দাবি করেছেন নিম্ন দামোদর বিভাগের এক কর্তা। তিনি জানান, সেতুটি বেহালের কথা তাঁদের জানা ছিল না। সেতুটি দ্রুত সংস্কার করে দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ একটি ভ্যানো রড় নিয়ে সেতু পার হচ্ছিল। ভ্যানোটি সেতুর প্রায় মাঝে গেলে হঠাৎই সেটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ভ্যানো-সহ চালক খালে পড়ে যান। সেতু ভেঙে পড়ার শব্দে স্থানীয় দোকানদাররা ছুটে আসেন। তাঁরা ভ্যানো চালককে উদ্ধার করেন। মনীন্দ্র কয়াল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘এমনিতেই সেতুটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার উপর রড নিয়ে ভ্যানো ওই সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছিল। আমরা চালককে বারণ করছিলাম। আমাদের কথা তিনি কানেই তুললেন না। আর বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত। ঘটনার খবর পেয়ে কয়েকশো মানুষ সেখানে ছুটে আসেন। তাঁরা তপনা পঞ্চায়েতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘‘আমরা সেতুটির বেহাল অবস্থা নিয়ে বহুবার পঞ্চায়েতে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পঞ্চায়েতের তরফ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ একই দাবি সোমরুকের বাসিন্দা স্নেহাশিস মাল, আক্কাস আলিদের। তপনা পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ আতিবর রহমান বলেন, ‘‘এই সেতু সংস্কারের দায়িত্ব সেচ দফতরের। আমরাও সেতুটির খারাপ অবস্থার কথা সেচ দফতরে বহুবার জানিয়েছি। মাস তিনেক আগেও একবার জানিয়েছি। সেচ দফতরের কর্তারা সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। বাস্তবে কিছুই হয়নি।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সেতু পেরিয়েই লোকজন বাগাণ্টা এবং ধুলোসিমলা যায়। কাছেই সোমরুক হাট। প্রতিদিন সেখানে হাজার হাজার লোক যায়। এছাড়া কাছেই সোমরুক হাইস্কুল রয়েছে। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীও এই সেতু পেরিয়ে স্কুলে যায়। সংস্কারের অভাবে সেতুটির নীচের দিক থেকে চাঁঙড় খসে পড়েছে। সেতুটিতে ঢালাই উঠে গিয়ে গর্ত হয়ে যায়। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা সংস্কার না করে সেখানে নতুন সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন। স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের পুলক রায় বলেন, ‘‘খুবই খারাপ ঘটনা। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেতু সংস্কারের কাজ দ্রুত করতে বলা হয়েছে।’’

সেচ দফতরের কর্তারা দাবি করেছেন, স্থানীয় মানুষজন ভুল করে সেতু সারানোর আবেদনপত্রটি অন্য বিভাগে জানিয়েছিলেন। ফলে সেচ দফতর বিষয়টি জানতে পারেনি। এ দিনই সেতু ভাঙার খবর পেয়েই এলাকাবাসীর দাবির কথা জানতে পেরেছে তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন