চালককে ‘মার’ পুলিশের, প্রতিবাদে বন্ধ বাস চলাচল

এক বাসচালককে পুলিশি নিগ্রহের অভিযোগে সোমবার সকালে বন্ধ হয়ে গেল হাওড়া ময়দান থেকে যাতায়াতকারী একাধিক রুটের বাস। এর জেরে সপ্তাহের প্রথম দিনে বাস না পেয়ে চূড়ান্ত নাকাল হতে হল সাধারণ মানুষকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১২
Share:

ভোগান্তি: অমিল বাস। হেঁটেই তাই গন্তব্যের দিকে। সোমবার, হাওড়া ময়দানে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

এক বাসচালককে পুলিশি নিগ্রহের অভিযোগে সোমবার সকালে বন্ধ হয়ে গেল হাওড়া ময়দান থেকে যাতায়াতকারী একাধিক রুটের বাস। এর জেরে সপ্তাহের প্রথম দিনে বাস না পেয়ে চূড়ান্ত নাকাল হতে হল সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ, এ দিন রাস্তায় বেআইনি পার্কিংয়ের অভিযোগে হাওড়া ময়দান-সল্টলেক রুটের এক বাসচালককে মারধর করে পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। এর পরেই অভিযুক্ত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন বাসকর্মীরা।

Advertisement

গত ১০ বছর ধরে হাওড়া ময়দানে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলার জন্য বাস ঘোরানোর জায়গা কমে গিয়েছে। তাই বঙ্কিম সেতু দিয়ে হাওড়া ময়দানে আসা বাস সেতুর শেষের দিকে এসে ডিভাইডার টপকে ফের হাওড়া স্টেশনের দিকে ঘুরে যায়। সেখান থেকেই যাত্রী তোলেন চালকেরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ৭১ নম্বর রুটের একটি বাসের চালক সাগর রাজবংশী ওই জায়গায় বাস ঘুরিয়ে রাস্তার উপরে পার্ক করে নেমে যান। আধ ঘণ্টা পরে ফিরে তিনি দেখেন, সিপিভিএফের এক কর্মী বাসের চাকার হাওয়া খুলতে যাচ্ছেন। অভিযোগ, সাগর বাধা দিলে বচসা শুরু হয়। সেখানে আসেন অন্য পুলিশকর্মীরাও। সাগরের অভিযোগ, তাঁকে পুলিশ কিয়স্কের মধ্যে ঢুকিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে পুলিশ তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ অবশ্য মারধরের কথা অস্বীকার করেছে। পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, সাগর রাস্তায় বাসটি পার্ক করে স্নান করতে গিয়েছিলেন। ৭১ নম্বর রুটের কর্মীরা এমন প্রায়ই করেন।

ঘটনার পরেই ৭১ নম্বর রুটের বাসকর্মীরা বঙ্কিম সেতুর উপরে আড়াআড়ি বাস রেখে অবরোধ শুরু করেন। অন্য ১০টি রুটের বাসও জোর করে বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। বাসকর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পুলিশি অত্যাচার চলছে। বাসস্ট্যান্ড না থাকায় চালক-কন্ডাক্টরেরা শৌচাগারে যেতে পারেন না। খেতেও পান না। তাঁদের আরও অভিযোগ, বাস দাঁড় করিয়ে নামলে পুলিশ কেস দেওয়ার নাম করে ২০০-৩০০ টাকা নিয়ে নেয়। এই সমস্যার মীমাংসা না হলে সমস্ত বাস বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ৭১ নম্বর রুটের বাসকর্মীরা।

Advertisement

হাওড়া বাস সিন্ডিকেটের পক্ষে বাবু বসু বলেন, “হাওড়া ময়দান থেকে ১০টি রুটের প্রায় ৩০০টি বাস রোজ চলে। এ দিনের ঘটনায় বাসকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস না পেলে কেউ বাস চালাতে রাজি হচ্ছিলেন না।’’

পরে হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাসকর্মীরা। পরে হাওড়া বাস সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের ওই রুটগুলিতে বাস চালাতে রাজি হয়েছেন বাসকর্মীরা।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়। একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। পরে বৈঠকে বসে মীমাংসা হয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন