এই সেই চায়ের দোকান। ছবি :তাপস ঘোষ।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক জনের। আহত ৪। সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচুড়ার ঘুটিয়াবাজার এলাকায়। পুলিশ জানায় মৃতের নাম সুলেখা দাস (৪৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ একটি গাড়ি প্রসাদ দাস মল্লিক রোড ধরে চুঁচুড়ার দিকে যাচ্ছিল। হুগলি জেলের কাছাকাছি আসতেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে চুঁচুড়ার ঘুটিয়া বাজার রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা একটি মোটরবাইকে, পরে দাস পরিবারের চায়ের দোকানে ধাক্কা মারে। গুঁড়িয়ে যায় চায়ের দোকানটি। বেগতিক বুঝে চালক চালক দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে পালাতে গেলে রাস্তার উল্টোদিকের একটি বাড়ির দেওয়ালে সজোরে ধাক্কা মারে। লোকজন ছুটে আসছে দেখে চম্পট দেয় চালক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় চায়ের দোকানে ছিলেন দোকান মালিক রঞ্জিত দাস, স্ত্রী সুলেখাদেবী এবং বড় মেয়ে স্নেহা দাস। গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুলেখাদেবীর। গুরুতর জখম হন রঞ্জিতবাবু এবং মেয়ে স্নেহা। তাঁদের দোকানে চা খেতে এসেচিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ৭৫ বছরের বৃদ্ধ অনিন্দ শীল। আচমকা গাড়ির ধাক্কায় পাশের একটি খালে ছিটকে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দারা দাস পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা রঞ্জিতবাবুর স্ত্রী সুলেখাদেবীকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। খাল থেকে উদ্ধার করে অনিন্দবাবুকেও হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানায়, গাড়িটি আটক করা হয়েছে। চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থল থেকে দু’পা এগোলেই হুগলি জেলা সংশোধনাগার। এই রাস্তায় কড়া নজরদারি থাকা সত্ত্বেও কিছু বাইক চালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। কয়েকমাস আগে এই একই জায়গায় বাইকের ধাক্কায় একজন জখম হয়েছিলেন। অভিজিৎ সেনগুপ্ত নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এ দিন হঠাৎই গাড়িটা দ্রুতগতিতে এসে প্রথমেই সামনের মোটরবাইকে ধাক্কা মেরে চায়ের দোকানে ঢুকে যায়। তারপর উল্টোদিকের বাড়িতে ধাক্কা মেরে আটকে যেতেই চালক গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম রঞ্জিতবাবু বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী চা বানাচ্ছিলেন। বড় মেয়ে তাঁকে সাহায্য করছিল। দোকানের একপাশে আমি বসেছিলাম। চা খাচ্ছিলেন অনিন্দবাবু। কিছু বুঝতেই পারলাম না। হুড়মুড়িয়ে গাড়িটা ঢুকে প্রথমে স্ত্রী ও মেয়েকে ধাক্কা মারে।’’