শতবর্ষ উদ্যাপন। নিজস্ব চিত্র।
‘ডিজিট্যাল’ যুগে নতুন প্রজন্ম ক্রমশ পাঠাগার বিমুখ হয়ে পড়ছে কি না, এই নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। এই আবহে ছাত্রছাত্রী বা তরুণ-তরুণীদের গ্রন্থাগারমুখী করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে শতবর্ষের উৎসব শুরু হয়েছে হুগলির প্রত্যন্ত জনপদ গুপ্তিপাড়ার শিশির বাণী মন্দির পাঠাগারে। উৎসবে মেতে উঠেছেন সাধারণ গ্রামবাসীরা।
শুক্রবার অনুষ্ঠানের সূচনা হয় রোড রেসের মধ্য দিয়ে। দুপুরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গ্রন্থাগার এবং রাজা রামমোহন রায় ফাউন্ডেশনের মহা নির্দেশক অরুণ চক্রবর্তী, সাহিত্যিক নলিনী বেরা, সাহিত্য গবেষক অঞ্জন সেন প্রমুখ। পাঠাগারের স্মরণিকা প্রকাশিত হয়। সন্ধ্যায় আবৃত্তি, গান পরিবেশিত হয়। পাঠাগারের নিজস্ব প্রযোজনায় নাটক ‘সাজানো বাগান’ পরিবেশিত হয়। শনিবার স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, গল্প বলা প্রতিযোগিতা হয়। তিনটি একাঙ্ক নাটক মঞ্চস্থ হয়। আজ, রবিবার থাকছে বিজ্ঞান বিষয়ক সেমিনার, বিতর্ক, নৃত্যনাট্য, মূকাভিনয় এবং গান।
বিশেষ বছরটি অবশ্য পালিত হচ্ছে গ্রন্থাগারিক ছাড়াই। পাঠাগার সূত্রের খবর, গ্রন্থাগারিক গণেশ গুপ্ত গত বছর অবসর নেওয়ার পরে পদটি শূন্য। তবে পাঠাগারের পরিচালন সমিতি আছে। শতবর্ষ উৎসব সফল করতে গ্রামবাসীরাও এগিয়ে এসেছেন। অশ্বিনীবাবু বলেন, ‘‘এটা সামগ্রিক ভাবে গ্রামের অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।’’ উৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কালীশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শতবর্ষ উপলক্ষে বছরভর নানা অনুষ্ঠান হবে। নতুন প্রজন্মকে বই এবং পাঠাগারের প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যেই কর্মসূচি ঠিক করা হচ্ছে।’’
পাঠাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে এই গ্রন্থাগারের নাম ছিল গুপ্তিপাড়া সাধারণ পাঠাগার। ১৯৩৩ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামী শিশিরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরে পাঠাগারটি তাঁর নামাঙ্কিত হয়। গ্রামীণ এই পাঠাগারে ৯০টি তালপাতার পুঁথি, ৫৬টি গাছের ছালের পুঁথি এবং ১৪০০টি তুলোট কাগজের পুঁথি রয়েছে। বর্তমানে এখানে ১০ হাজার বই আছে।