অর্থ উপসমিতির বৈঠক দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে না। গত মঙ্গলবার সাধারণ সভা ডাকা হলেও প্রধান, উপপ্রধান এবং দলনেতা হাজির হননি। তাই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা এবং দুর্নীতি অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন দলেরই সদস্যরা। গত চার মাস ধরে পারস্পরিক এই অসহযোগিতার জেরে আরামবাগে তৃণমূল পরিচালিত তিরোল পঞ্চায়েতে ডামাডোল চলছে।
ফলে নানা বিধ উন্নয়নের কাজ আটকে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও আরামবাগের বিডিও মহম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের ডামাডোল নিয়ে লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে কোনওভাবেই উন্নয়নের কাজে ব্যঘাত ঘটানো যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, এখানে ২০ জন সদস্য আছে। গত চার মাস ধরে পঞ্চায়েত প্রধান কাজি নিজামুদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হন ১৭ জন সদস্য। পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুস সুকুরের অভিযোগ, ‘‘গাছ কাটা থেকে শুরু করে রাস্তা সংস্কার, নিকাশি নালা-সহ বিভিন্ন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রধান অর্থ উপসমিতির বৈঠক ও সাধারণ সভায় অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই কাজ করাচ্ছিলেন। টেন্ডার ছাড়াই নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।’’
আর এক সদস্য গোলাম আম্বিয়া বলেন, ‘‘সদস্যদের অন্ধকারে রেখে পঞ্চায়েত থেকে ১৭ লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি করা হয়। পঞ্চায়েতে জমা পড়েছে ২ লক্ষ টাকা। তাও ব্যক্তির অনুদান হিসাবে।’’’ ওই সদস্যদের দাবি, ব্লক প্রশাসনের কাছে কোনও অভিযোগ না করে জেলা নেতৃত্বের কাছে জানানো হয়। জেলা নেতৃত্ব পঞ্চায়েত আইন মানার নির্দেশ দেওয়ার পরেও প্রধান নিজেকে পরিবর্তন করেননি।
এ দিকে এই ডামাডোলের জেরে পঞ্চায়েতের উন্নয়ন থমকে আছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত আধিকারিকেরা। কেন্দ্রীয় চতুর্দশ ও তৃতীয় রাজ্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থের যাবতীয় উন্নয়নের কাজ বন্ধ। বন্ধ হয়েছে ১০০ দিনের কাজ। এমনকী পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকেও ন্যূনতম কোথাও পানীয় জলের কলও মেরামত করা যাচ্ছে না। প্রধান কাজি নিজামুদ্দিন বলেন, ‘‘কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। কোনও দুর্নীতি হয়নি। দলীয়ভাবে বিষয়টা মিটে গিয়েছে। আগামী ডিসেম্বরেই বিভিন্ন কাজের টেন্ডার ডাকা হবে।’’