গয়ংগচ্ছ: খসে পড়েছে চাঙড়। বিপজ্জনক বাড়ির নোটিস টাঙিয়েছে পুরসভা। তবুও সেখানেই চলছে অফিস। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
পেরিয়ে গিয়েছে কয়েক বছর। তবুও বদলাল না হাওড়ার পিলখানা মোড়ের কাছের সিআইডি অফিসের চিত্র।
কয়েক বছর আগে ওই অফিসে গিয়ে দেখা গিয়েছিল, মাথার উপরে বিপজ্জনক ভাবে সিমেন্টের চাঙড় খসে বেরিয়ে পড়েছে লোহার রড। এ দিক-সে দিক থেকে ঝুলছিল
শিকড়। সোমবার ফের ওই অফিসে গিয়ে দেখা গেল, খসে পড়েছে চাঙড়, ভেঙে পড়েছে বাড়ির কার্নিশের বড় একটি অংশ। বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বারান্দা। বাড়িটির অধিকাংশ দেওয়ালে ধরেছে ফাটল। তিনতলার চিত্রও একই। ওই বাড়ি থেকে অন্য ভাড়াটেরা তালাবদ্ধ করে চলে গেলেও রয়ে গিয়েছে সিআইডি-র হাওড়া জেলার ডিডিআই অফিস। হাওড়া পুরসভার তরফে ঘোষিত ওই বিপজ্জনক বাড়ির ভিতরে বসেই কাজ করছেন জনা কয়েক সিআইডি কর্মী।
প্রায় সত্তর বছর আগে তৈরি পিলখানা মোড়ের ৩৯২, জিটি রোডের ওই বাড়িটি স্থানীয়দের কাছে সিআইডি অফিস বলেই পরিচিত। বাড়ির একতলায় রয়েছে হাওড়ার সিআইডি অফিস। কমিশনারেট এলাকা বাদ দিয়ে হাওড়া জেলার সব তদন্তের দায়িত্ব রয়েছে ওই অফিসের উপরে। প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গ ফুটের ওই অফিসের এক দিকে রয়েছে গোয়েন্দা কর্মীদের থাকার ঘড়। এ দিন ওই অফিসে গিয়ে দেখা যায়, গোয়েন্দা কর্মীদের বসার জায়গার উপরেই লাগানো রয়েছে প্লাস্টিক, বিভিন্ন জায়গা থেকে
চাঙড় খসে পড়েছে। নাম বলতে না চাইলে গোয়েন্দা কর্মীরা জানান, তাঁদের নতুন অফিস হচ্ছে হাওড়া ময়দানে। নথিপত্র সব ইতিমধ্যেই সেখানে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। সিআইডি-র এক কর্তা জানান, পুজোর আগেই চেষ্টা চলছে পুরো অফিস নতুন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। ইতিমধ্যেই অফিসের বাইরে থেকে সিআইডি লেখা গ্লোসাইন বোর্ড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই বিল্ডিংয়ে সিআইডি-র অফিসের সঙ্গে রয়েছে বাড়ির মালিকেরই একটি মোবাইল সংস্থার শোরুম। দোতলাটি জনা চার ভাড়াটের, তবে এখন কেউ সেখানে থাকেন না। একই অবস্থা তিনতলারও। সব ক’টি ঘর ভাড়াটেদের দখলে থাকলেও তালা দেওয়া। মালিক জগন্নাথ প্রসাদ জানিয়েছেন, বাড়িটির হাল খুবই বিপজ্জনক। বারবার হাওড়া পুরসভাকে চিঠি দেওয়ার পরেও তাঁরা বিপজ্জনক বোর্ড লাগানো ছাড়া আর কিছুই করেনি বলে অভিযোগ তাঁর।
কেন তিনি নিজে ওই বাড়ি ভেঙে ফেলছেন না? জগন্নাথবাবুর দাবি, ভাড়াটেরা তাঁকে না জানিয়েই দেড় দশক আগে ভাড়া বাকি রেখে ঘরে তালা ঝুলিয়ে চলে গিয়েছেন। ফলে ওই তালাবন্ধ অবস্থায় বাড়ি ভাঙা তাঁর পক্ষে সম্ভব না বলে জানিয়েছেন তিনি। হাওড়া পুরসভার সূত্রের খবর, ওই বাড়িটি ২০১২ সালেই বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি অফিস সেখান থেকে না সরলে তা ভাঙা সম্ভব না পুরসভার পক্ষে। পুরসভার এক কর্তা জানান, সিআইডি সেখান থেকে অফিস সরিয়ে নিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।