হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাকিলা খাতুন, লাল মল্লিক ও জয়নাল আবেদিন। ছবি: তাপস ঘোষ।
জমির দখল নিয়ে দুই পরিবারের সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৮ জন গুরুতর জখম হলেন। মঙ্গলবার সকালে হুগলির পান্ডুয়ার বেলুন-ধামাসিন পঞ্চায়েতের বেজপাড়া গ্রামে ওই ঘটনায় এক পক্ষ অভিযোগ দায়ের করলেও রাত পর্যন্ত অপর পক্ষ কোনও অভিযোগ করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফের অশান্তি এড়াতে এলাকায় পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেজপাড়ার ওই জমি নিয়ে বহু বছর ধরেই মফিজ মল্লিক ও তাঁর আত্মীয় লাল মল্লিক এবং জয়নাল আবেদিন মল্লিকের অশান্তি চলছে। মফিজের দাবি, ৩৭ বছর ধরে তাঁরা ওখানে চাষ করছেন। অন্যদিকে মফিজের আত্মীয় লাল মল্লিক এবং জয়নাল আবেদিন মল্লিকের দাবি, ওই জমি তাঁদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া। তাঁরাই ওই জমির মালিক। মঙ্গলবার ফের সেই বিবাদ চরমে ওঠে।
এদিন সকাল ৯টা নাগাদ লাল ও জয়নাল জমিতে চাষ করার জন্য মেশিন নিয়ে আসেন। তারা কিছুটা চাষও করে ফেলেন। এ খবর মফিজের কানে পৌঁছলে তিনিও দলবল নিয়ে মাঠে চলে আসেন। জয়নালদের চাষে বাধা দিলে দু’তরফের লোকজনের মধ্যে বচসা থেকে মারামারি শুরু হয়ে যায়। লাঠি, কোদাল নিয়ে একে অন্যকে আক্রমণ করে। এক মহিলা সহ দু’তরফের আটজন গুরুতর জখম হন। আমজাদ এবং জয়নালের মাথায় গভীর ক্ষত হয়। দুজনেরই মাথা ফেটে যায়। সাকিলা খাতুনের ডান পায়ের হাড় ভেঙে যায়। ধারাল অস্ত্রের কোপে তাঁর মাথায় গভীর ক্ষত হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘গোলমাল শুনে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েকজন ছোটাছুটি করছে। কয়েকজন মাঠের মধ্যে পড়ে।’’ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পান্ডুয়া থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে আহতদের সকলকে হাসপাতালে পান্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মফিজের পরিবারের তরফে সাজাহান মল্লিক বলেন, ‘‘আমার ঠাকুরদা এই ৩৫ শতক জমি বাবাকে দিয়েছিল। আমরা ওই জমি ৩৭ বছর ধরে চাষ করছি। বেশ কিছুদিন ধরে আমার খুড়তুতো ভাইরা ওই জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে এলাকার কিছু নেতার মদতে। এখন জোর করে অশান্তি বাধিয়ে জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। দাদা বাধা দিলে বাধা দিলে গোলমাল বাধে। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
অন্যদিকে, বিরুদ্ধ পক্ষের লাল মল্লিক বলেন, ‘‘ ওই জমি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। ওরা দখল করে রেখে দিয়েছিল। গোলমাল এড়াতে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, একবার ওরা চায করে ফসল নেবে। পরের বার আমরা। কিন্তু ওরা তাতেও রাজি হয়নি। এ দিন আমরা চাষ করতে গেলে ওরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ করে।’’