আনাজ নয়, শাঁখা-সিঁদুরে ভরসা মান্ডির

রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তা জানান, শুধু চাষিরা এখানে আসবেন আর আনাজ বিক্রি করে চলে যাবেন, সেই পরিকল্পনা আঁকড়ে থাকলে একটিও কিসান মান্ডি চালু করা যাবে না।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০২:৩১
Share:

প্রতীকী চিত্র।

আনাজ বিকোচ্ছে সামান্যই। কিসান মান্ডি থেকে দেদার বিক্রি হচ্ছে জামাকাপড়, হাঁড়ি-কড়া, শাঁখা-সিঁদুর!

Advertisement

ফড়েদের হাত থেকে চাষিদের বাঁচানোর জন্য ব্লকে ব্লকে কিসান মান্ডি তৈরি করছে রাজ্য সরকার। যাতে চাষিরা সরাসরি সেখানে ফসল আনেন। পাইকারি ব্যবসায়ী বা সাধারণ ক্রেতারা সেই ফসল কিনবেন। এতে চাষিরা ন্যায্য দাম পাবেন বলেও দাবি রাজ্য সরকারের।

কিন্তু হাওড়া জেলায় পাঁচটি কিসান মান্ডি (উদয়নারায়ণপুর, আমতা-১, উলুবেড়িয়া-১, বাগনান-১ এবং শ্যামপুর-২ ব্লক) কার্যত পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এর মধ্যে উলুবেড়িয়ার মান্ডিতে সপ্তাহে একদিন হাট বসছে। সেখানেই কাঁচা আনাজের সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে জামাকাপড়, হাঁড়ি-কড়া, শাঁখা-সিঁদুর!

Advertisement

কেন এই ব্যবস্থা?

রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তা জানান, শুধু চাষিরা এখানে আসবেন আর আনাজ বিক্রি করে চলে যাবেন, সেই পরিকল্পনা আঁকড়ে থাকলে একটিও কিসান মান্ডি চালু করা যাবে না। বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনতে হবে। মান্ডিগুলিকে লাভজনক করতে তাই ভিন্ন ভিন্ন মান্ডির জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা ছাড়া গতি নেই।

হাওড়ার ওই পাঁচটি কিসান মান্ডি চালু করা নিয়ে যে তাঁরা উদ্বিগ্ন, তা মানছেন জেলার কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা। কারণ, কোনও মান্ডি নিয়েই চাষি বা পাইকারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগ্রহ নেই। আমতা-১ এবং উদয়নারায়ণপুর কিসান মান্ডিতে যাঁরা স্টল নিয়েছেন, তাঁরা দোকান চালু করছেন না। শুধুমাত্র উলুবেড়িয়াতে অনিয়মিত ভাবে চার-পাঁচটি দোকান খুলছে। সদ্য চালু হওয়া বাগনান-১ এবং শ্যামপুর -২ কিসান মান্ডিতে এখনও স্টল বিলি করা হয়নি বলে কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের খবর।

এক-একটি মান্ডির জন্য জমি নেওয়া হয়েছে পাঁচ একর করে। খরচ হয়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা করে। এত টাকা বিনিয়োগ করে কার্যত ভস্মে ঘি ঢালা হয়েছে বলেই মনে করছেন কৃষি বিপণন দফতরের কর্তাদের একাংশ। তবে হাল ছাড়তে নারাজ ওই দফতর। তাই নানা পরিকল্পনা করছে তারা। সেই পরিকল্পনামতোই উলুবেড়িয়া মান্ডিতে সপ্তাহে একদিন করে হাট বসানো হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও বিক্রি করার ব্যবস্থা হয়েছে। হাটে যাতে ব্যবসায়ীরা বসতে পারেন, তার জন্য ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে ছোট ছোট ছাউনি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উদয়নারায়ণপুরের মান্ডিতে পশুহাট করার কথা ভাবছে কৃষি বিপণন দফতর। আমতায় ভাবা হচ্ছে নার্সারির কথা। শ্যামপুরে ধান, পান এবং নারকেলের পাইকারি বাজার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাগনান রথতলা থেকে পাইকারি আনাজের বাজার তুলে মান্ডিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে, এগুলি এখন রয়েছে পরিকল্পনার স্তরে। কবে থেকে কার্যকর হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন