অসম্পূর্ণ: পূর্ত দফতরের অংশে কাজ হয়েছে কামারকুণ্ডুতে । নিজস্ব চিত্র
ঠিক রাস্তার উপর থেকে কংক্রিটের চওড়া ঢালাই শুরু হয়ে হাওড়া-বধর্মান কর্ড শাখার রেল লাইনের ধার বরাবর গিয়েছে।
একই ভাবে তারকেশ্বরের দিক থেকেও কংক্রিটের ঢালাই করা চাতাল রেল লাইনের কোলে গিয়ে ছুঁয়েছে।
মাঝে রেল লাইনের উপরের অংশটুকুই কেবল ফাঁকা।
কামারকুণ্ডু স্টেশনে উড়ালপুলের ওই মাঝের অংশটুকু জুড়বে কবে? এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘‘সেটাই তো লাখ টাকার প্রশ্ন।’’
গত কয়েক দশক ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা কামারকুণ্ডু লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুলের দাবি জানিয়ে আসছেন। তারকেশ্বরমুখি ওই রাস্তায় যানবাহনের চাপ এমনিতেই বেশি। তার উপর আলুর মরসুমে হিমঘরে যাওয়ার ট্রাকের লাইন পড়ে। পরিস্থিতি এমন হয় যে কামারকুণ্ডু স্টেশন থেকে আলুর মোড়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের মুখ পর্যন্ত সেই ট্রাকের লাইন পড়ে যায়। কিন্তু লেভেল ক্রসিংয়ে রেলের গেট ওঠে না। হয়রানির শিকার সাধারণ মানুষ, স্কুল কলেজের পড়ুয়া থেকে মুমূর্ষু রোগী।
এই সব সমস্যার কথা মাথায় রেখেই গত বছর উড়ালপুলের দাবিতে সিলমোহর দেয় রেল ও রাজ্য সরকার। কিন্তু প্রথমেই জমি নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। পূর্ত দফতরের জায়গায় বসা কিছু দোকান তুলতে গেলে বাধা পায় সরকার।
সমীক্ষায় দেখা যায় কিছু মানুষকে তাঁদের নিজদের জমিও ছাড়তে হবে উড়ালপুলের স্বার্থে।
পূর্ত দফতরের দাবি, সে সব সমস্যা মিটিয়ে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ২০১৭ সালেই কাজ শুরু করে ফেলেছে। কিন্তু রেলের অংশের কাজ এগোচ্ছে না বলে অভিযোগ। নিয়ম অনুয়ায়ী রেল লাইনের দু’পাশের অংশের কাজ সারবে পূর্ত দফতর। রেল লাইনের উপরের অংশে কাজ করবে রেল।
তিন-চারটি স্তম্ভ দাঁড়িয়ে রয়েছে হুড়হুড়া খালের উপর। নিজস্ব চিত্র
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেলের কাজে গতি নেই। ফলে তাঁদের দুর্ভোগ রয়েই গিয়েছে।
বিশেষত, গোটা শ্রাবণ মাস তারকেশ্বরে যান পুণ্যার্থীরা জল ঢালতে— পায়ে হেঁটে। ফলে ভিড় বাড়ে এলাকায়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা আবার বললেন, ‘‘কাজ গতি হারিয়েছে। তাই আবার শুরু হয়েছে জবর দখল।’’ এলাকায় গিয়েও দেখা গেল, সরকারি জমি থেকে তুলে দেওয়া দোকান অনেকেই ফের পেতেছেন। তৈরি হয়েছে অস্থায়ী মাচা। অর্থাৎ কেঁচে গণ্ডুষ।
রেলের এক আধিকারিকও স্বীকার করেছেন, ‘‘২০১৯ সালের মার্চ মাসের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখনও যে ভাবে কাজ হচ্ছে, তাতে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে না।’’ যদিও ওই আধিকারিকই দাবি করেছেন, বাড়তি দু’তিন মাস সময় পেলেই তাঁরা কাজ শেষ করে ফেলবেন।
পূর্ত দফতরও জানিয়েছে, পরস্পর সমন্বয়ের ভিত্তিতে এই ধরনের কাজ হয়। বড় কাজ। সময় কিছুটা বাড়তি লাগতেই পারে।