হাওড়ায় ফুটপাথ দখল করে অবৈধ হোর্ডিং

স্টেশন চত্বরে অবৈধ হোর্ডিং-এর কথা মেনে নিচ্ছেন পুরকর্তারা। ফুটপাথ দখল করে হোর্ডিং বসানো নিয়ে তাঁদের যুক্তি, পুজোতে ছুটি থাকার সুযোগে কিছু লোক এই বেআইনি কাজ করেছে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৯
Share:

এ ভাবেই ফুটপাথে ইট গেঁথে লাগানো হয়েছে হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র।

এত দিন হোর্ডিং-এর দাপটে ক্রমেই চুরি হয়ে যাচ্ছিল হাওড়া স্টেশন চত্বরের আকাশ। অভিযোগ, এ বার দখল হল ফুটপাথও। ইটের স্তম্ভ গেঁথে একাধিক হোর্ডিং বসানো হল স্টেশন সংলগ্ন বঙ্কিম সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের ফুটপাথে। প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটলেও হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে।

Advertisement

স্টেশন চত্বরে অবৈধ হোর্ডিং-এর কথা মেনে নিচ্ছেন পুরকর্তারা। ফুটপাথ দখল করে হোর্ডিং বসানো নিয়ে তাঁদের যুক্তি, পুজোতে ছুটি থাকার সুযোগে কিছু লোক এই বেআইনি কাজ করেছে।

হাওড়া স্টেশন এবং বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পুরসভা অনুমোদিত হোর্ডিং-এর জেরে অনেকটা আকাশ ঢাকা পড়েছে আগেই। পুরসভার বক্তব্য, দৃশ্য দূষণ যাতে না হয় সে দিকে নজর রেখেই এই হোর্ডিং লাগানোর অনুমতি দেওয়া হয়। অথচ বাস্তব ছবিটা হল, জি আর রোড থেকে হাওড়া ব্রিজ অ্যাপ্রোচ রোডের চারদিক ভরে গিয়েছে পুরসভার অনুমোদিত হোর্ডিং-এ। বড় বড় হোর্ডিং-এ চাপা পড়ে গিয়েছে আশপাশের হোটেল, বাড়ি। হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (হোর্ডিং) গৌতম চৌধুরী বলেন, ‘‘বাম-বোর্ডের আমলে হোর্ডিং থেকে বছরে যে আয় হতো, তার অনেক গুণ বেশি আয় হয় এখন। ২০১৩ সালে বাম-বোর্ড হোর্ডিং খাতে ৪৩ লক্ষ টাকা আয় করেছিল। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে বর্তমান বোর্ড এই খাতে চার কোটি টাকা আয় করেছে।’’

Advertisement

কিন্তু বেশি আয়ের কথা ভেবে এ ভাবে দৃশ্য দূষণ? গৌতমবাবু বলেন, ‘‘দৃশ্য দূষণ যাতে না হয়, সে কথা ভেবেই হোর্ডিং-এর অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এটা ঠিক, হাওড়া স্টেশন চত্বরে কিছু অবৈধ হোর্ডিং এখনও রয়ে গিয়েছে। সেই হোর্ডিংগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

হাওড়া স্টেশনের দিক থেকে বঙ্কিম সেতুতে ওঠার সময় বাঁ দিকে নজর পড়তেই দেখা গেল, ফুটপাথের উপরে ইটের স্তম্ভ করে লোহার খাঁচা দিয়ে হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। অথচ যে জায়গায় ফুটপাথ দখল করে হোর্ডিং-এর জায়গা করা হয়েছে সেখান দিয়ে পথচারীরা যাতায়াত করেন। কিন্তু হোর্ডিং-এর স্তম্ভ তৈরি হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে পথচারীদের যাতায়াত।

ফুটপাথ দখল করে হোর্ডিং বসানোর বিষয়টি যে পুরসভার নজরে আসেনি তা মেনে নিয়েছেন গৌতমবাবু। তাঁর যুক্তি, ‘‘পুজোর ছুটির সুযোগে এই কাজ হয়েছে। পুজোর ছুটিতে নজরদারি চালানোর মতো লোকবল পুরসভার নেই। তবে পুজোর মরশুম কেটে গেলে বেআইনি হোর্ডিং ভাঙার অভিযান শুরু হবে।’’

হাওড়া স্টেশন চত্বরকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার আদর্শ মনে করে বিপণনের স্বার্থে প্রতি ইঞ্চি জায়গা কাজে লাগাতে চলে প্রতিযোগিতা। এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পুরসভাকে ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে হোর্ডিং লাগান। গত বছর এমন কিছু হোর্ডিং ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ ফের শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন