ক্রমেই বাড়ছে দুর্ঘটনা, কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন

দুর্ঘটনা কমাতে সরকারের তরফ থেকে ‘সেফ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শুধু সরকারের তরফ থেকে নয়, বিভিন্ন পুজো কমিটিও এই কর্মসূচিকে সফল করতে পুজোয় থিম হিসেবেও ব্যবহার করছে। কিন্তু বাস্তবে সেখান থেকে কতটা ফল মিলেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩০
Share:

রাস্তা দখল করে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক, লরি। মাস কয়েক আগে এই অহল্যাবাই রোডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লরি, ট্রাকের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিলেন চণ্ডীতলার মশাট বিদ্যাসাগর মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। রাস্তার পাশে সমস্ত হোটেল মালিক এবং অন্য চালকদের গাড়ি না দাঁড় করানোর জন্য বলা হয়েছিল। সমস্যাটি প্রশাসনের নজরে জানানো হয়েছিল। তার পরেও কাজ হয়নি। ছবি: দীপঙ্কর দে।

দুর্ঘটনা কমাতে সরকারের তরফ থেকে ‘সেফ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শুধু সরকারের তরফ থেকে নয়, বিভিন্ন পুজো কমিটিও এই কর্মসূচিকে সফল করতে পুজোয় থিম হিসেবেও ব্যবহার করছে। কিন্তু বাস্তবে সেখান থেকে কতটা ফল মিলেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

Advertisement

পথচারীদের দাবি, গোটা হুগলি জেলা নয়। শুধুমাত্র আরামবাগ মহকুমার চারটি থানা এলাকায় নজর রাখলে বোঝা যাবে এই কর্মসূচি কতটা সফল হয়েছে। কারণ, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪টি পথ দুর্ঘটনায় মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোথাও পোড়ানো হয়েছে বাস। কোথাও হয়েছে অবরোধ-ভাঙচুর। দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি রূপায়ণে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। পথ দুর্ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে দাবি করেছে বিভিন্ন নাগরিক মঞ্চ। দুর্ঘটনার বহর নিয়ে উদ্বিগ্ন মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবজিৎ বসু। তিনি বলেন, ‘‘আরামবাগ শহর-সহ মহকুমার চারটি থানা এলাকার খারাপ রাস্তা এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করে সেখানে যান চলচাল নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই শুরু করা হবে।’’

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমা পাঁচটি জেলা বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর এবং হাওড়ার কেন্দ্রবিন্দু। তাই আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচলা করে। তার উপর দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে কলকাতা এবং তারকেশ্বরের যোগাযোগেরও মূল রাস্তা আরামবাগ-অহল্যাবাঈ এবং আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডও রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ওই দু’টি রাস্তায় দুর্ঘটনা প্রায় নিত্য দিনের চিত্র হয়ে দাঁড়়িয়েছে। প্রাণহানির ঘটনাও কম হচ্ছে না। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ভাঙা রাস্তার জন্য যেমন দুর্ঘটনা ঘটছে, তেমনি কিছু রাস্তা বিক্ষিপ্তভাবে বেদখল হয়ে রয়েছে। ফলে সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ওই রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও আছে বেআইনি যান এবং হকারের দৌরাত্ম্য। মূল রাস্তার গায়ে ব্যক্তিগত ইমারতি দ্রব্য জমাও থাকছে। এ সবের পাশাপাশি যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে কার্যকরী ভূমিকা নিতে দেখা যায় না।

Advertisement

মহকুমা পূর্ত দফতরের (রাস্তা) সহকারী বাস্তুকার জ্যোতিপ্রকাশ ধর দাবি করেন, ‘‘রাস্তা দখল নিয়ে আমরা অসহায়। অভিযান চালিয়ে রাস্তা দখলমুক্ত করে দেওয়া হয়। দু’দিন যেতে না যেতেই আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। মহকুমা প্রশাসন থেকে থানা, ব্লক, পঞ্চায়েত সমস্ত স্তরে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের অন্য দফতরগুলির সাহায্য না পেলে সফলতা মিলবে না।’’ গোঘাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘কোথাও রাস্তা দখলের খবর পেলে দখলমুক্ত করার চেষ্টা করি। সম্প্রতি কামারপুকুরের শ্রীপুর থেকে অভিযোগ পেয়ে রাস্তা দখলমুক্ত করে দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন