শুরু হয়েছে কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
শুরু হল উলুবেড়িয়ায় রেলওয়ে উড়াল সেতু তৈরির কাজ। এর জন্য পূর্ত (সড়ক) দফতর লেভেল ক্রশিং সংলগ্ন এলাকা থেকে জবরদখলকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। এখান থেকেই উড়ালসেতুর কাজ শুরু হয়েছে।
উড়াল সেতুটি তৈরিতে রেল এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে টাকা দেওয়ার কথা। তবে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে টাকা চেয়ে দরবার করে। কেন্দ্রীয় সরকারও এই আবেদন মেনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তারা যে টাকা দেবে এ কথা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া পরেই ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উড়াল সেতু তৈরির কাজে হাত দেয় রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর। সেতুটি তৈরি হবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রশিং-এর উপরে।
২০১০-১১ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে সিদ্ধান্ত হয়, কোনও উড়াল সেতুর পুরো কাজটি করবে হয় রাজ্য সরকার, নয়ত রেল। যদি রেল পুরো কাজ করে তা হলে রাজ্য সরকারের ভাগে যে টাকা পড়বে তা তারা দিয়ে দেবে রেল কর্তৃপক্ষকে। অন্য দিকে রাজ্য সরকার যদি পুরো উড়ালপুলটি তৈরি করে তা হলে রেলের অংশে যে খরচ হবে তা রেল কর্তৃপক্ষ তুলে দেবেন রাজ্য সরকারের হাতে। সেই নিয়ম মেনে উলুবেড়িয়ার উড়াল সেতুটি করার কথা হয় রাজ্য সরকারের।
তবে কাজটি শুরু করতে বেশ দেরি হয়ে গিয়েছে। ২০১১ সালে সেতুটি তৈরির খরচ ধরা হয়েছিল ২৫ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। ২০১৪-২৫ আর্থিক বছরে সংশোধিত বাজেট পৌঁছায় ৩৭ কোটি টাকায়। এর মধ্যে রেলের অংশে ধরা হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। বাকি ২০ কোটি টাকা খরচ করার কথা ছিল রাজ্য সরকারে।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক এবং জাহাজ মন্ত্রকের কাছে টাকা চেয়ে গত ২০১৪ সালের ২০ মে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর চিঠি দেয়। সেই চিঠির উত্তরে ওই বছরেরই শেষে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী মন্ত্রী নিতিন গড়গড়ি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে জানান, তাঁর মন্ত্রক ১৬ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উড়াল সেতুটি তৈরির জন্য দেবে।
উলুবেড়িয়ায় সাংসদ সুলতান আহমেদ বলেন, “পূর্ত (সড়ক) দফতর আবেদন পাঠানোর পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমি একাধিকবার লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন দফতরের কাছে তদ্বির করি টাকার জন্য।’’
রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রের খবর, আগামী ২ বছরের মধ্যে উড়াল সেতু তৈরির কাজ শেষ হবে। রাজ্যে এই প্রথম রেলওয়ে উড়াল সেতুর কাজ করছে রাজ্য সরকার। এই ধরণের কাজে অভিজ্ঞতা না থাকার জন্য তারা সমস্যায় পড়বে কিনা জানতে চাওয়া হলে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের এক কর্তা জানান, রেলের অংশে কাজ করার জন্য এমন ঠিকা সংস্থাকে নির্বাচন করা হয়েছে, যাদের এই কাজে অভিজ্ঞতা আছে। তা ছাড়া রেলের যে সব অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার আছেন তাঁদের কাছ থেকে নিয়মিত পরামর্শ নেওয়া হবে।
অন্য দিকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে সূত্রের খবর, রেলের অংশের প্রদেয় টাকা যথা সময়ে রাজ্য সরকারকে দিয়ে দেওয়া হবে। এই মর্মেই তাদের সঙ্গে রেলের চুক্তি হয়েছে।