পুজোর আগে শেষ হবে না কাজ

উলুবেড়িয়ায় থমকে রেলের উড়ালপুল

উড়ালপুলের ৯০ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি আছে রেললাইনের উপরের অংশটুকু জোড়ার কাজ। সেটাও করতে সময় লাগবে মাত্র ৬ ঘণ্টা। তা হলে কেন হচ্ছে না? 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৬
Share:

ফাঁক: রেল লাইনের দু’ধার পর্যন্ত এসে বন্ধ হয়ে গিয়েছে উড়ালপুল নির্মাণ। ছবি: সুব্রত জানা

গত জুনে হাওড়া শরৎসদনে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, উলুবেড়িয়ায় রেল উড়ালপুল চালু হবে সেপ্টেম্বরে। কিন্তু তা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। পুজোর আগেও হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে, উৎসবের মরসুমে উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ে যানজটে মানুষের দুর্ভোগের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

ওই উড়ালপুলের ৯০ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি আছে রেললাইনের উপরের অংশটুকু জোড়ার কাজ। সেটাও করতে সময় লাগবে মাত্র ৬ ঘণ্টা। তা হলে কেন হচ্ছে না?

দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ এ জন্য খামখেয়ালি বর্ষাকেই দায়ী করেছেন। তাঁরা রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরকে জানিয়ে দিয়েছেন, এই মরসুমে বর্ষার গতিপ্রকৃতি বোঝা যাচ্ছে না। আচমকা নিম্নচাপ হয়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। কতক্ষণ বৃষ্টি হবে তার পূর্বাভাসও ঠিকমতো যাচ্ছে না। ফলে, কাজটি হাতে নেওয়া ঝুঁকির হয়ে যাবে। কাজ চলাকালীন বৃষ্টি হলে সব কিছু ওলট-পালট হয়ে যেতে পারে। সেই কারণেই বর্ষার মরসুম শেষ হয়ে গিয়েছে বলে আবহাওয়া দফতরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরেই সেতুর দু’টি মুখ জোড়া হবে।

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয়কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না। পুজোর আগে ওই কাজ করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। রাজ্য পূর্ত দফতরের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ষার মরসুম শেষ হওয়ার পরেও কাজের যাবতীয় পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতিতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’’ পূর্ত (সড়ক) দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্রেন চলাচল বন্ধের জন্য রেল কবে সময় দেবে সেই অপেক্ষায় আমরা মুখিয়ে আছি। আমাদের তরফের সব কাজ শেষ। শুধু সেতুর দু’টি মুখ জোড়ায় অপেক্ষায়। তারপরেই সেতু চালু করে দেওয়া হবে।’’

উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ে যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। একবার রেলগেট বন্ধ হলে দু‌’দিকের গাড়িকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আবার লেভেল ক্রসিংয়ের গেট খুলে যখন গাড়ি ছাড়া হয়, তখন ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট ভেঙেও মাঝেমধ্যে ট্রেন ও গাড়ি চলাচ‌ল বিঘ্নিত হয়। এই সমস্যা সমাধান করতেই ২০১৫ সালের মাঝামাঝি উড়ালপুলটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এটি তৈরি করছে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর। খরচ হচ্ছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। রেলের অংশে নির্মাণ কাজের টাকা রেল পূর্ত (সড়ক) দফতরকে দিয়ে দিয়েছে। বাকি টাকা খরচ করছে রাজ্য সরকার।

প্রায় ছ’মাস আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে বেশিরভাগ নির্মাণকাজ। শুধু রেললাইনের উপরের অংশটুকু জোড়ার কাজ বাকি। এর জন্য ট্রেন চলাচল বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের সঙ্গে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা আলোচনা চালাচ্ছেন। প্রথমে রাজ্য পূর্ত দফতর চেয়েছিল চার ঘণ্টা করে তিন দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে রেলের তরফে জানানো হয়, এতক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা যাবে না। শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষের আলোচনায় স্থির হয়, এক লপ্তে টানা ৬ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। তার মধ্যেই সেতুর দু’টি মুখ জোড়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement