আরামবাগেও করোনার হানা

এ বার আরামবাগেও হানা দিল করোনা। তার জেরে হুঁশ ফিরল গোটা শহরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২০ ০৫:৪৫
Share:

সহকারী সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ। হাত ধরে টানছেন কর্মীরা। আরামবাগ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

এ বার আরামবাগেও হানা দিল করোনা। তার জেরে হুঁশ ফিরল গোটা শহরে।

Advertisement

শহরের একটি ‘কোভিড হাসপাতালে’ চিকিৎসাধীন এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয় মঙ্গলবার। তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্টে ‘করোনা পজ়িটিভ’ ধরা পড়েছে বলে ওই হাসপাতাল এবং মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এ খবর ছড়াতেই বৃহস্পতিবার শহর কার্যত ফাঁকা হয়ে যায়। শাসকদলের নেতাদেরও ত্রাণসামগ্রী বা সরকারি প্রকল্পের ফর্ম নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়নি। পিপিই-সহ সুরক্ষা সরঞ্জামের দাবিতে আরামবাগ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীরা সহকারী সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। কারণ, বৃদ্ধা সুপার স্পেশ্যালিটিতে প্রথমে ভর্তি ছিলেন। দু’টি হাসপাতালে এবং বৃদ্ধার পাড়ায় এ দিন জীবাণুনাশক ছড়ায় দমকল।

মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, “বৃদ্ধার যকৃৎ কাজ করছিল না। অন্য জটিল রোগও (কো-মর্বিডিটি) ছিল। বুধবার লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়ে জানতে পেরেছি করোনা পজ়িটিভ। তবে, তিনি কী ভাবে করোনায় আক্রান্ত হলেন, জানা যায়নি। অসুস্থ থাকায় তিনি ঘর থেকে বেরোতেন না।”

Advertisement

বৃদ্ধার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়মিত ডায়ালিসিস নিতে হত তাঁকে। বাতেও ভুগছিলেন। নিজে হাঁটা-চলা করতে পারতেন না। ক’দিন ধরেই জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার প্রকোপ বাড়ায় দুপুরে তাঁকে আরামবাগ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে বিকালে মহকুমার ‘কোভিড হাসপাতাল’ হিসেবে গড়ে তোলা একটি নার্সিংহোমে পাঠানো হয়। সেখানে ভেন্টিলেশনে আধ ঘন্টার মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধার পরিবারের সকলকে এবং কোভিড হাসপাতালের আইসোলেশনে এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। নিভৃতবাসে যেতে হয়েছে একটি গাড়ির চালককেও। বৃদ্ধার পড়শি সাতটি পরিবারকে ঘর থেকে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে।

এ দিন বৃদ্ধার শরীরে করোনার উপস্থিতির কথা জানতে পেরে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্রায় ১২০ জন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী সুরক্ষা সরঞ্জামের দাবিতে সহকারী সুপারকে ঘেরাও করেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, “রোগীদের তত্ত্বাবধানের জন্য অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকতে হয় আমাদের। তারপরেও মাস্ক ছাড়া স্বাস্থ্য নিরাপত্তার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। ওই বৃদ্ধার যে করোনা পজ়িটিভ, তা-ও আমাদের জানানো হয়নি।’’ হাসপাতালের সুপার সিদ্ধার্থ দত্ত অবশ্য সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন