Coronavirus

রাস্তায় পুলিশ, ভিড়ে লাগাম আরামবাগে

আরামবাগ ছাড়া শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটী-সহ হুগলির অন্যত্র সকালের দিকে দোকান-বাজারে পরিচিত ভিড় থাকছেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০১:৫৫
Share:

ফাঁকা: পুলিশি নজরদারির পরেই সুনসান রামকৃষ্ণ সেতু। আরামবাগে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

সক্রিয় হল পুলিশ প্রশাসন। ভিড়ে লাগাম পরল আরামবাগে। লকডাউন পর্বের গোড়ার দিকে পুলিশ কড়াকড়ি করায় আরামবাগ মহকুমায় ভিড় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ রাস্তায় তেমন বের হননি। কিন্তু গত বেশ কয়েকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল, লাগামছাড়া ভিড়। কী শহরে, কী গ্রামে। ক্রিকেট খেলা, মাছ ধরা, পাড়ার মাচায় জটলা— কিছুই বাদ যাচ্ছিল না। পুলিশের বিরুদ্ধে নজরদারিতে শিথিলতার অভিযোগও শোনা যাচ্ছিল। নিচুতলার পুলিশকর্মীরা জানিয়েছিলেন, লোকবল কম থাকাতেই সর্বত্র নজরদারি সম্ভব হচ্ছিল না। তবে, শুক্রবার থেকে ফের পুলিশ রাস্তায় নামতেই ভিড় পাতলা হল।

Advertisement

এ দিন ভোর থেকেই পুলিশ বিভিন্ন রাস্তায় ‘নাকা চেকিং’ শুরু করে। হাট-বাজারে অবাঞ্ছিত ভিড় নিয়ন্ত্রণে শামিল হন এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস, আরামবাগ থানার আইসি পার্থসারথি হালদারও। তাঁদের সঙ্গে ছিল ছিল পুলিশ বাহিনী এবং র‌্যাফ। আরামবাগ শহরের বেশ কিছু জায়গায় ড্রোন উড়িয়েও নজরদারি চলতে থাকে। ফলে, বেলা ১১টার পর পুরো মহকুমাই ফের সুনসান। এ জন্য পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন অনেকেই। শহর এবং বিভিন্ন ব্লক এলাকায় প্রতিটি বড় বাজার-হাট ঘিঞ্জি জায়গা থেকে সরিয়ে ব্যবসায়ীদের ১০ ফুট অন্তর বসানোর ব্যবস্থা হয়েছিল গোড়াতেই। ক্রেতাদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করার নির্দিষ্ট জায়গাও চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছিল। সে সব নির্দেশও এ দিন ফের কড়াকড়ি ভাবে বলবৎ করা হয়েছে। মোটরবাইক এবং গাড়ি দেখলেই তা আটকে বৈধ কাগজপত্র দেখা-সহ রাস্তায় বেরনোর কারণ এবং উপযুক্ত প্রমাণ দেখতে চেয়েছে পুলিশ। যাঁরা দেখাতে পারেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এতেই অবশ্য নজরদারি থামেনি। আনাজ, মুদিখানা এবং ওষুধে কালোবাজারি হচ্ছে কিনা যাচাই করতে মহকুমা প্রশাসন এবং পুলিশ যত্রতত্র হানা দেওয়াও শুরু করেছে। কয়েকটি মিষ্টির দোকান নির্দিষ্ট সময় (১২টা থেকে বিকাল ৪টে) না-মেনে সকালেই খুলে দেওয়ায় তা বন্ধ করে চরম সতর্ক করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের। শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডোমপাড়া, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আন্দিমহল, ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁধপাড়া, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিপাড়া-সহ বিভিন্ন পাড়ায় ঢুকে যাঁরা জটলা করছিলেন, তাঁদের কয়েকজনকে আটক করা হয়। বিকেলে পথে নামেন মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহও। এসডিপিও (আরামবাগ) বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় ড্রোন উড়িয়ে দেখতে চাইছি, কারা নিয়মিত জটলা করছেন। যাঁরা অযথা ঘুরছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছি।”

Advertisement

আরামবাগ ছাড়া শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটী-সহ হুগলির অন্যত্র সকালের দিকে দোকান-বাজারে পরিচিত ভিড় থাকছেই। শহরগুলির কিছু জায়গায় জরুরি পরিষেবার আওতায় নেই, এমন দোকানপাটও খোলা হচ্ছে। তবে, দুপুরের পর থেকেই সব সুনসান। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বিনা কারণে রাস্তায় ঘোরাঘুরির জন্য চন্দননগর কমিশনারেট এলাকা থেকে মোট ২৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, “আমরা চাইছি বাজারগুলোর কাছাকাছি যদি কোনও বড় পরিসর থাকে, তা হলে সেখানে বাজার সরিয়ে দিতে। সে ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে দূরত্ব বজায় থাকবে। চেষ্টা করেও মানুষকে রোজ বাজার করার প্রবণতা থেকে বের করা যাচ্ছে না। তাতে আমরা না চাইলেও ভিড় বাড়ছে।”

অন্যদিকে, হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত রাস্তায় ভিড় থাকলেও দুপুরের পর থেকে এলাকা সুনসান হতে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন