১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল আরামবাগের খানাকুল-১ ব্লকের রামমোহন ২ নম্বর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রকল্প মোতাবেক স্থানীয় পালদিঘি খেলার মাঠের চার ধারে একটি গাছও রোপণ না করে প্রায় ৪৯ হাজার টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। স্থানীয় শ্রমিকদের অভিযোগ, গাছ না লাগানো হলেও তার মজুরি বাবদ তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে টাকা ঢুকেছে তা স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জোরজবস্তি কেড়ে নিতে চাইছে।
হেলান ৪ নম্বর সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য পূর্ণিমা চক্রবর্তীর স্বামী স্থানীয় তৃণমূল নেতা শান্তিবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ এবং সেচের অভাবে তা বাঁচানো যায়নি। শ্রমিকদের অভিযোগও ঠিক নয়।’’ রামমোহন ২ পঞ্চায়েতের প্রধান অরূপ দাসের দাবি, ‘‘কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়নি।’’
খানাকুল ১-এর বিডিও গোবিন্দ হালদার বলেন, ‘‘অভিযোগ এখনও পাইনি। গাছ লাগানোর পর তা মরে গেলে আলাদ কথা। কিন্তু বৃক্ষরোপণ আদৌ হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
খানাকুল-১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হেলান গ্রামের পাল দিঘির খেলার মাঠের চার ধারে গাছ লাগানোর কর্মসূচীর অনুমোদন হয়েছিল ২০১৪ সালের জুলাই মাসে। শ্রমিকদের মজুরি এবং গাছের চারা কেনা বাবদ ৪৮ হাজার ৮৩৯ টাকা অনুমোদন হয়েছিল গত বছরের ২০ অগাস্ট। সেপ্টেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে কাজ শুরু হবে জানিয়ে সেই সংক্রান্ত প্রদর্শনী বোর্ডও লাগানো হয়। দিন দশেক আগে সেই প্রদর্শনী বোর্ডটিও হঠাৎই উধাও হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী শান্তি চক্রবর্তী বেশ কিছু বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে বলে দাবি করলেও প্রকল্পের অনলাইনে মাত্র ১০ হাজার ৮২৫ টাকার কাজ নথিভুক্ত করা হয়েছে। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অনলাইনে যা নথিভুক্ত হয়েছে তা হল প্রকল্প সংক্রান্ত বোর্ডটির জন্য খরচ হয়েছে ৪ হাজার ৭০০ টাকা, বাঁশ গাছের চারার জন্য ৪ হাজার ৭৮২ টাকা ৪০ পয়সা, নারকেল চারা বাবদ ৬৩৭ টাকা এবং গাছ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেড়া দেওয়ার বাঁশ কেনা বাবদ ৭০৫ টাকা ৬০ পয়সা। এই হিসাবে মোট খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৮২৫টাকা। বাকি টাকার কোনও হিসাব নথিভুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ।