ডাইন অপবাদে ঘরছাড়া দম্পতি

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিপুর হাটতলায় থাকতেন ওই দম্পতি। সেখানে তাঁদের একটি দোকানও ছিল। অভিযোগ, তাঁদের একমাত্র ছেলের মৃত্যুর পরে এলাকার জনাকয়েক বাসিন্দা মহিলাকে ডাইন অপবাদ দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৭ ০১:৩৪
Share:

হরিপুরে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মহিলা কমিশন। নিজস্ব চিত্র

ডাইন অপবাদ দিয়ে এক দম্পতিকে এলাকাছাড়া করার অভিযোগ উঠেছিল এলাকার কিছু বাসিন্দার বিরুদ্ধে। বছর দশেক ধরে বাড়ি ফিরতে পারছেন না তাঁরা। এখন বাস করেন পঞ্চায়েতের তৈরি করে দেওয়া ইন্দিরা আবাস যোজনার বাড়িতে। পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুরে শনিবার দম্পতির পুরনো বাড়ি পরিদর্শন করে তা দ্রুত দম্পতিকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ব্লক প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বললেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিপুর হাটতলায় থাকতেন ওই দম্পতি। সেখানে তাঁদের একটি দোকানও ছিল। অভিযোগ, তাঁদের একমাত্র ছেলের মৃত্যুর পরে এলাকার জনাকয়েক বাসিন্দা মহিলাকে ডাইন অপবাদ দেয়। তার পরে স্বামী-স্ত্রীকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। তাঁরা বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন। বছর চারেক আগে পঞ্চায়েত তাঁদের ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দেন। এখন সেখানেই তাঁরা থাকেন। দম্পতি জানান, এলাকার এক বাসিন্দা একটি মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য। তাঁর পরামর্শে মাসখানেক আগে তাঁরা প্রথমে প্রশাসনের কাছে নিজেদের বাড়িটি ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা করার আবেদন জানান। কয়েক দিন আগে বিএলএলআরও-কে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পাণ্ডবেশ্বরের বিডিও কৌশিক সমাদ্দার।

এরই মধ্যে রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছেও লিখিত আবেদন জানান মহিলা। এ দিন সকালে সুনন্দাদেবী ইন্দিরা আবাসের বাড়িতে গিয়ে ওই দম্পতির সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে পরিত্যক্ত পুরনো বাড়িটি দেখতে যান। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই বিডিও-র কাছে বিষয়টি জানতে চান। বিডিও জানান, তিনি ইতিমধ্যে বাড়িটি নিয়ে বিশদে খোঁজ নিয়ে গিয়েছেন। কৌশিকবাবু বলেন, “ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের রেকর্ডে ওই ব্যক্তির নাম নথিভুক্ত আছে। দলিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবারের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিএলএলআরও-কে রিপোর্ট দিতে বলেছি।’’

Advertisement

সুনন্দাদেবী বিডিও-কে বলেন, “জীর্ণ হয়ে যাওয়া বাড়িটি সংস্কার-সহ যা যা করা প্রয়োজন, তা করে দ্রুত দম্পতিকে বাড়িটি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’ দম্পতি বলেন, ‘‘নিজেদের বাড়ি থেকে অপবাদ নিয়ে বিতাড়িত হওয়া মানতে পারছিলাম না। মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন আসায় সুবিচারের আশা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন