সঙ্কটে ডানকুনির বিস্কুট কারখানা

সোমবার ফের বৈঠকের ঘোষণা

এ দিকে, সমস্যা সমাধানে শ্রম দফতরের ডাকা দ্বিতীয় বৈঠকও বাতিল হয়ে গেল। সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মালিকপক্ষ উপস্থিত না থাকায় শ্রীরামপুরে উপ শ্রম কমিশনারের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় রাজ্য শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বুধবারেই মালিকপক্ষ জানিয়ে দেন, ‘বিশেষ কারণে’ তাঁরা বৈঠকে থাকতে পারবেন না। আগামী সোমবার শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডানকুনি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

আরও দুই শ্রমিককে বরখাস্ত করলেন ডানকুনির বিস্কুট কারখানা ‘গ্যাঞ্জেস ভ্যালি ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড’ কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে শনিবারের শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনায় আটজনকে ওই শাস্তি দেওয়া হল। এই বহিষ্কারের পর বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক-অসন্তোষ বাড়ছে।

Advertisement

এ দিকে, সমস্যা সমাধানে শ্রম দফতরের ডাকা দ্বিতীয় বৈঠকও বাতিল হয়ে গেল। সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মালিকপক্ষ উপস্থিত না থাকায় শ্রীরামপুরে উপ শ্রম কমিশনারের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় রাজ্য শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বুধবারেই মালিকপক্ষ জানিয়ে দেন, ‘বিশেষ কারণে’ তাঁরা বৈঠকে থাকতে পারবেন না। আগামী সোমবার শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

বুধবার বিকেলে কলকাতায় শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব এবং বরখাস্ত ছয় শ্রমিক। দিলীপবাবু জানান, স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিনি গিয়েছিলেন। পরিস্থিতির কথা মন্ত্রীকে জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

ডানকুনির ওই কারখানায় একটি নামি সংস্থার বিস্কুট তৈরি হয়। শ্রমিকদের দাবি, কারখানাটি ভালই চলছিল। কর্তৃপক্ষের ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্তের জন্যই সমস্যা তৈরি হয়। উৎপাদনের পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়। গত ২৪ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উৎকন্ঠা তৈরি হয়। কিছু শ্রমিক স্বেচ্ছাবসর নেন। অন্য শ্রমিকদের অভিযোগ, স্বেচ্ছাবসরের জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের জোর করা হচ্ছে। বেশ কয়েক জন শ্রমিকের স্বেচ্ছাবসরের ব্যাপারে শনিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনটি শ্রমিক সংগঠনের (আইএনটিটিইউসি, সিটু এবং আইএনটিইউসি) নেতাদের চুক্তি হয়।

এতে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। শ্রমিক নেতা এবং কর্তৃপক্ষের লোকজন কারখানায় আটকে পড়েন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিক্ষোভের নামে শ্রমিকরা বিশৃঙ্খলা করেন। সোমবার কারখানায় সাময়িক বন্ধের (টেম্পোরারি ক্লোজার) বিজ্ঞপ্তি ঝোলানো হয়। তাতে জানানো হয়, ছয় শ্রমিক অন্যদের নিয়ে এই অবস্থা তৈরি করেছেন। এরপর তাঁদের বহিষ্কার (ডিসমিস) করা হয়।

শ্রমিকরা জানান, বুধবার সকালে আরও দুই শ্রমিকের বিরুদ্ধে একই শাস্তি ঘোষণা করা হয়। তবে চিঠিতে সোমবারের তারিখই দেওয়া হয়েছে। এক শ্রমিক বলেন, ‘‘কারখানার গেটে শাস্তির বিজ্ঞপ্তি সেঁটে দেওয়া হচ্ছে। আর সংস্লিষ্ট শ্রমিকের কাছে তা পাঠানো হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ করে। মালিকপক্ষ যথেচ্ছাচার করছেন। মিথ্যা অভিযোগ তুলে আন্দোলন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই চুক্তি করার অভিযোগে নেতাদের উপরে ফুঁসছেন সাধারণ শ্রমিকদের একাংশ। মঙ্গলবার তাঁরা শ্রম দফতরে চিঠি দিয়ে নেতাদের ‘বাতিল’ করে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় রিষড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মৃত্যুঞ্জয় মেটে বলেন, ‘‘আমরা শ্রমিকদের পাশে রয়েছি। আমরা চাই কারখানা চালু থাকুক। প্রশাসন নিশ্চয়ই কিছু একটা ব্যবস্থা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন