দূরত্ব বিধি মেনেই ত্রাণ শিবিরে থাকার ব্যবস্থা দুই জেলায়
Coronavirus Lockdown

ধেয়ে আসছে আমপান, প্রস্তুতি তুঙ্গে

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে হুগলিতে মাইক প্রচার শুরু করল জেলা পুলিশ ও প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া ও উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০১:২১
Share:

ঝড়ের আগে নদী থেকে নৌকা ডাঙায় তুলে নিয়েছেন মাঝিরা। উলুবেড়িয়ার একটি ঘাটে। —নিজস্ব িচত্র

প্রায় দু’দশক আগের স্মৃতি উস্কে বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিয়েছে সুপার সাইক্লোন আমপান। দিল্লির মৌসম ভবন আশ্বাস দিয়েছে, ওই ঘূর্ণিঝড় সুপার সাইক্লোনে পরিণত হলেও অতটা ভয়াল হয়ে ডাঙায় আছড়ে পড়বে না। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনও খামতি রাখতে নারাজ হাওড়া ও হুগলি জেলা প্রশাসন।

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে মানুষজনকে ত্রাণ শিবিরে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে ব্লকে ব্লকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে জোর কদমে। হুগলি জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা, পশ্চিম মেদিনীপুর লাগোয়া হুগলির আরামবাগ মহকুমায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রশাসনের নজরদারি সেখানে কিছুটা বেশি। মহকুমার ছয়টি ব্লকের মোট তিন হাজার মানুষকে মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে হুগলিতে মাইক প্রচার শুরু করল জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। জেলার চারটি মহকুমার ফ্লাড সেন্টারগুলিকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের তরফে জেলার ১৮টি ব্লকের বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। জেলা সদর চুঁচুড়া, চন্দননগর এবং শ্রীরামপুর মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় স্কুল বাড়িগুলিকে ত্রাণ শিবিরের কাজে লাগানোর কথা জানানো হয়েছে। গঙ্গা, মুণ্ডেশ্বরী, দামোদরে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৫০০ কর্মীকে।

Advertisement

শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঝড়ে কোনও অঘটন ঘটলে জিনিসপত্র পৌঁছনোর কাজ শুরু করলে মানুষকে সুরাহা দেওয়া যাবে না। তাই আমরা পুরসভা এবং ব্লক স্তরে খাদ্য সামগ্রী এবং ত্রিপল পৌঁছে দেওয়ার কাজ মঙ্গলবার থেকেই শুরু করেছি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগিয়ে রান্না করা খাবার দেওয়ার প্রস্তুতিও রাখছি প্রশাসনের তরফে।’’

আমপানের মোকাবিলায় হাওড়াতে প্রস্তুতি তুঙ্গে। শ্যামপুর ১ ও ২, বাগনান ১ ও ২ এবং উলুবেড়িয়া ১ ব্লকে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে উলুবেড়িয়া পুরসভা এলাকা। সব থেকে বেশি ক্ষতি হতে পারে বাগনান ২ ব্লকে। ফলে কিছু অতিরিক্ত ত্রাণ ও জরুরি ব্যবস্থা এই ব্লকের জন্য করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান। সব জায়গায় মঙ্গলবার বিকেল থেকে নীচু এলাকার মানুষজনকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে হাওড়ার জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

এই এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে রূপনারায়ণ, হুগলি এবং দামোদর নদ। তিনটি নদীতেই আজ বুধবার নৌকা ও লঞ্চ চলাচল করবে না। মাছ ধরাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সব এলাকায় রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

এ দিকে যেহেতু করোনা আবহ চলছে তাই ত্রাণ শিবিরগুলিতে যাঁরা আশ্রয় নেবেন তাঁদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার উপরে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন। মূলত স্কুলবাড়িগুলিকেই নেওয়া হচ্ছে ত্রাণ শিবিরের জন্য। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এক একটি ভবনে যাতে খুব বেশি মানুষ না থাকেন সেই জন্যই এই ব্যবস্থা। প্রতিটি ব্লককে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার করে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ শিবিরে যাঁরা আশ্রয় নেবেন তাঁদের ব্যবহারের জন্য। চাইলে আরও মাস্ক দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন