Cyclone Amphan

কবে হবে টাকা আদায়, পাওয়া যাচ্ছে না উত্তর

প্রশাসনিক ‘গড়িমসি’ দেখে বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের মুখে ওই ‘দুর্নীতি’ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।   

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২০ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই সার। আমপানের পরে তিন মাস কাটতে চলল। এখনও হাওড়া জেলায় ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া সে ভাবে শুরুই হল না। ফলে, মোট কত ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তের কাছে কত টাকা গিয়েছে, সে হিসেবও মিলছে না। প্রশাসনিক ‘গড়িমসি’ দেখে বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের মুখে ওই ‘দুর্নীতি’ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

টাকা ফেরানোর আইনি প্রক্রিয়া প্রায় কোথাও শুরু হয়নি বলে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। এক বিডিও জানান, ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজে টাস্ক ফোর্স যখন কাজ শুরু করে, তখনও পর্যন্ত সবাইকে টাকা দেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েতগুলির করা প্রথম তালিকায় যে নামগুলি ছিল, তার সঙ্গে দ্বিতীয়বারও হাজার হাজার আবেদন নেওয়া হয়।

মূলত দ্বিতীয়বার যে নামগুলি জমা পড়ে, তার উপরে জোর দিতে গিয়েই প্রথম তালিকায় যে সব ভুয়ো নাম ছিল, সেগুলি আর যাচাই করে দেখা হয়নি। ফলে, জানা যায়নি প্রথম তালিকায় ভূয়ো নামের সঠিক সংখ্যা এবং তাঁদের মধ্যে কারা টাকা পেয়েছেন। সেই কারণে ভূয়ো প্রাপকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

একই কথা জানান আরও কয়েকজন বিডিও। তাঁদের বক্তব্য, যদি কোনও অভিযোগ আসে তখন তাঁরা তদন্ত করে দেখে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করবেন। কিন্তু এখনও একটিও অভিযোগ আসেনি বলে বিডিওদের একাংশ জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘ভুয়ো প্রাপকদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া জারি‌ আছে। তাই এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এখনও তৈরি হয়‌নি।’’ তবে, কোনও টাকাই যে ফেরত আসেনি, এমন নয়।

বিডিওরাই জানিয়েছেন, কোনও ব্লকের ৮ জন, কোনও ব্লকের ১২ জন বা ১৮ জন ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্ত স্বেচ্ছায় টাকা ফেরত দিয়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে শ’খানেক মানুষের থেকে টাকা ফেরত পাওয়া গিয়েছে। আমপান হয় গত ২০ মে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে মূলত পঞ্চায়েত এবং কিছু পঞ্চায়েত সমিতি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, জেলায় মোট ১৫ হাজার ৭৪৮টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তালিকা প্রকাশিত হতেই জেলা জুড়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। বিরোধীরা তো বটেই, কিছু ক্ষেত্রে শাসকদলের লোকজনও তালিকায় ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের নাম থাকার অভিযোগ তোলেন। এ সবের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ বিলিও শুরু হয়ে যায়। ‘দুর্নীতি’র কালি মুছতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশাসন বিডিওদের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গঠন করে তালিকা যাচাই শুরু করে।

তারপরেও চার প্রশ্নের উত্তর এখনও অমিল। তবে, জেলা প্রশাসনের এক কর্তা দাবি করেছেন, টাস্ক ফোর্স কাজে নামার পরে কিছু ভূয়ো প্রাপকের টাকা আটকে দিয়ে সরকারের কিছু টাকা বাঁচানো গিয়েছে। যদিও এই সংখ্যাও খুব কম। ব্লক প্রতি গড়ে কুড়ি জনের বেশি নয় বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন