গুমোডাঙায় দু’ঘণ্টা অবরোধের জেরে দিল্লি দাঁড়িয়ে ট্রাক, বাস ও অন্যগাড়ি।
বিচ্ছিন্ন ভাবে নানা জায়গায় রেল বা রাস্তা অবরোধ। এই চিত্র বাদ দিলে হুগলিতে সোমবার জনজীবন মোটের উপর সচল রইল। অফিস-কাছারি, শিল্পাঞ্চল— সবই স্বাভাবিক ছিল। যানবাহনের অভাবে ভুগতে হয়নি সাধারণ মানুষকে। অবরোধ তুলতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে পুলিশকে। বেশ কয়েক জন বন্ধ সমর্থনকারীকে গ্রেফতারও করা হয়।
পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, রাফাল দুর্নীতি-সহ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে তুলে ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। সমর্থন করে বাম দলগুলি। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত ডাকা হয়েছিল বন্ধ। অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই কিছু জায়গায় বন্ধ সমর্থনকারীরা রাস্তায় নেমে পড়েন। সাড়ে ৮টা নাগাদ শ্রীরামপুর স্টেশনে সিপিএম রেল অবরোধ করে। একই সময়ে কংগ্রেস এবং বামেরা মিলে রিষড়ার ওয়েলিংটন চটকলের সামনে জিটি রোড অবরোধ করেন। সকাল ৯টা নাগাদ ডানকুনির গুমোডাঙায় দিল্লি রোড অবরোধ করে কংগ্রেস। দু’ঘণ্টার অবরোধে যানজট তৈরি হয়। রিষড়ায়ও কংগ্রেস রেল অবরোধ করে। শেওড়াফুলিতে জিটি রোডে কংগ্রেসের অবরোধ তুলতে পুলিশকে বলপ্রয়োগ করতে হয়। পাঁচ জন অবরোধকারীকে গ্রেফতার করা হয়। বৈদ্যবাটীতে চার সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। ডানকুনিতে সিপিএম রেল অবরোধ করে।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক জন অবরোধকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে ব্যাপারে পুলিশ সর্তক ছিল।’’
তবে বৈদ্যবাটীতে মেয়েদের একটি স্কুলে এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকেই পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরিয়ে দেন কংগ্রেস সমর্থকেরা। বন্ধ সমর্থনকারীদের অবশ্য দাবি, তাঁদের আবেদন শুনে পড়ুয়ারাই ফিরে যায়। কিছু স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম ছিল। গঙ্গাপাড়ের শিল্পাঞ্চল বা ডানকুনিতে বন্ধের প্রভাব পড়েনি। শ্রমিকদের হাজিরা প্রায় স্বাভাবিক ছিল। জেলা সদর চুঁচুড়াতেও জনজীবন ছিল স্বাভাবিক।
তবে পূর্ব রেলের একটি সূত্রের খবর, জেলায় হাওড়া-বর্ধমান মেন ও কর্ড, তারকেশ্বর এবং কাটোয়া শাখা মিলিয়ে ৯টি জায়গায় অবরোধ হয়। সেই কারণে দূরপাল্লা এবং লোকাল ট্রেন কিছুটা দেরিতে চলেছে।
হাওড়া জেলায়ও তেমন প্রভাব পড়েনি বন্ধের। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগ এবং আমতা বিভাগে ট্রেন চলেছে সময় মেনেই। ধর্মতলা থেকে বাগনান, গাদিয়াড়া, ভবানীপুর এবং আমতা রুটের সিটিসি বাসের চলাচলও ছিল স্বাভাবিক। অন্যদিকে হাওড়া জেলা বাস সমন্বয় কমিটিরও দাবি, জেলার গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল করেছে স্বাভাবিক ভাবেই। দু’একটি জায়গা ছাড়া দেখা যায়নি রাস্তা অবরোধ বা পিকেটিং-এর চিহ্ন।
তবে তুলনামূলকভাবে এদিন রাস্তায় মানুষের সংখ্যা কম ছিল। বাগনান, উলুবেড়িয়া, আমতা, ডোমজুড় প্রভৃতি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে কিছু দোকান বন্ধ ছিল। লরি ও ট্রাকের সংখ্যাও ছিল কম।