বিপন্ন সেচ ও নিকাশি

সংস্কার হয় না মজে যাচ্ছে ডাকাতিয়া

সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। যার ফলে মজে যেতে বসেছে ডাকাতিয়া খাল। যা বর্ষায় প্লাবনের আশঙ্কা জাগিয়েছে বাসিন্দাদের মনে।

Advertisement

তাপস ঘোষ

ধনেখালি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২১
Share:

স্রোতহারা: মজে যাওয়া ডাকাতিয়া খাল। নিজস্ব চিত্র

সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। যার ফলে মজে যেতে বসেছে ডাকাতিয়া খাল। যা বর্ষায় প্লাবনের আশঙ্কা জাগিয়েছে বাসিন্দাদের মনে।

Advertisement

সেচের জল সরবরাহ এবং নিকাশি ব্যবস্থা সচল রাখতে ডাকাতিয়া খাল কাটা হয়েছিল। হুগলির জেলার বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে এই খাল বয়ে গিয়েছে। ধনেখালির দশঘরা-২ পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি অঞ্চলের উপর বয়ে যাওয়া এই খালের দীর্ঘদিন কোনও সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ ওই সব এলাকার মানুষের। একদা সুপ্রবাহী এই খাল আগাছায় মুখ ঢেকে এখন নালায় পরিণত। পলি জমে খালের প্রবাহও প্রায় বন্ধ। ফলে খাল থেকে সেচের জল পাওয়াও বন্ধ হতে বসেছে। খালের জলের ভরসা ছেড়ে গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হয়েছেন চাষিরা।

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে চাষিদের অভিযোগ, ডাকাতিয়া খাল সংস্কারের জন্য স্থানীয় পঞ্চয়েত থেকে জেলাপ্রশাসন সর্বত্র দরবার করেও কোন ফল হয়নি। ফলে দশঘরা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের অধীন সিরিজপুর, শঙ্করপুর পূর্বপাড়া অঞ্চলের কয়েক হাজার বাসিন্দা বর্ষা নামলেই প্লাবনের আশঙ্কায় ভোগেন। শুধু খাল সংস্কার নয়, খালের পাড় ঘেঁষা কাঁচা রাস্তাও প্রশাসনের উদাসীনতার শিকার। ভাঙাচোরা রাস্তা বর্ষায় গ্রামবাসীদের কাছে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, খালের আগাছা সংস্কার না হওয়ায় সাপের উৎপাত বেড়েছে। খালপাড় ঘেঁষা রাস্তা দিয়ে বহু মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু অন্ধকার নামলেই এই পথে হাঁটাচলা আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় চাষী অহিন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘‘ডাকাতিয়া খালের মাধ্যমে আগে জমিতে চাষের জন্য জল নেওয়া হত। কিন্তু সংস্কার না হয়ে খালের যা চেহারা দাঁড়িয়েছে তাতে সেচের জল পাওয়া দুষ্কর। বাধ্য হয়ে গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এতে চাষের খরচও বেড়েছে। আমার মতো বহু চাষিই এই সমস্যায পড়েছে।’’ স্থানীয় চাষিদের দাবি, অবিলম্বে খাল সংস্কার করে তাঁরা যাতে সেচের জল পান তার ব্যবস্থা করা হোক।

স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘সেচের পাশাপাশি ডাকাতিয়া খাল মূলত এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাকে সচল রাখত। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই খালের সংস্কার নিয়ে বার বার দাবি উঠলেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। যার ফলে মজে গিয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে এই খাল। তা ছাড়া বর্ষায় মজা খাল জল ধরে রাখায় অক্ষম হওয়ায় প্লাবনের আশঙ্কাও থাকে। তাই অবিলম্বে এই খালের সংস্কার প্রয়োজন।’’

এ বিষয়ে দশঘরা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান লক্ষ্মী সরেন বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে এই ডাকাতিয়া খাল বয়ে গিয়েছে। তবে দশঘরার যে সব এলাকা দিয়ে বয়ে গিয়েছে সেই সব অংশ পলি পড়ে মজে গিয়েছে। সংস্কারের জন্য আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সেচ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে শীঘ্রই খাল সংস্কারের কাজ শুরু করা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন