ফের নির্দেশ চন্দননগর পুরসভার
Deforestation

না কেটে সরবে গাছ

কলকাতার কিছু জায়গায় এর আগে প্রযুক্তির সাহায্যে গাছ স্থানান্তর হলেও রাজ্যের জেলাগুলিতে এর নজির নেই।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০১:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি

প্রাথমিক ভাবে বাধা পাওয়ায় ফের চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ শহরের বড়বাজার এলাকার সেই কৃষ্ণচূড়া গাছটি না-কেটে স্থানান্তরের নির্দেশ দিল। পুলিশ, পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমি মিলিত ভাবে সেই কাজ করবে।

Advertisement

কলকাতার কিছু জায়গায় এর আগে প্রযুক্তির সাহায্যে গাছ স্থানান্তর হলেও রাজ্যের জেলাগুলিতে এর নজির নেই। সে ক্ষেত্রে চন্দননগরের ওই কৃষ্ণচূড়া স্থানান্তর করা হলে এই জাতীয় উদ্যোগ জেলায় প্রথম হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে পুরসভা এবং পরিবেশপ্রেমীদের দাবি।

চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু লেন, ‘‘গাছ কাটলে পরিবেশের উপর কুপ্রভাব পড়ে। সে জন্যই গাছ কাটা আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে গাছ একান্ত বাধ্য হয়েই স্থানান্তর জরুরি হয়ে পড়ে। বড়বাজার এলাকা থেকে আসা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমি গাছ স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছি। প্রযুক্তির মাধ্যমে গাছটি সরিয়ে ফেলা হবে। এটি সফল হলে তা জেলায় নজির সৃষ্টি করবে।’’

Advertisement

যাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে পুরসভার এই সিদ্ধান্ত, তাঁরা বড়বাজারের বাসিন্দা সর্বজিৎ পাল এবং তাঁর স্ত্রী দীপালি। তাঁদের আবাসনের সামনে, গ্যারাজের মুখে রয়েছে গাছটি। ফলে, তাঁদের পক্ষে গ্যারাজে গাড়ি রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাঁরা গাছটির স্থানান্তর চেয়ে পুরসভায় আবেদন করেছিলেন গত বছর। এই আবেদনের ভিত্তিতেই গত বছরের অক্টোবরে গাছ স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় অনুমতি দেয় পুরসভা। সেই কাজ কার্যকর করার জন্য চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমিকে প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের সেই নির্দেশ কার্যকর করার সময় স্থানীয় কিছু মানুষ আপত্তি জানান। ফলে, তখনকার মত গাছটি স্থানান্তর করা যায়নি।

এ বারও চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ পরিবেশ অ্যাকাডেমিকেই প্রযুক্তিগত সহায়তার দায়িত্ব দিয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ ওই আবাসনের কাছেই গাছটি সরিয়ে বসানোর নির্দিষ্ট জায়গাও বাতলে দিয়েছেন। দীপালিদেবী বলেন, ‘‘গাছ সরানোর লিখিত নির্দেশ পুর কমিশনার দিয়েছেন। এখন সকলের সঙ্গে কথা বলে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে। এই বিষয়টি কার্যকর হলে বহু গাছ বাঁচানো সম্ভব হবে। নিয়মমতো এই কাজে সমস্ত খরচ আমরাই দেব।’’ পরিবেশ অ্যাকাডেমির কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ সমোয়চিত পদক্ষেপ করেছেন। এতে গাছ স্থানান্তরের বিষয়টি জনপ্রিয় হবে। পরিবেশ রক্ষায় তা মঙ্গলজনকও হবে।’’

বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশবিদেরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, আর গাছ কাটা নয়। নিতান্ত প্রয়োজন হলে গাছ স্থানান্তরের প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হোক। এ রাজ্যে ইতিমধ্যে কলকাতার কাছেই রাজারহাটে সেই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু গাছ সরানো হয়েছে। এ বার কলকাতার চৌহদ্দি ছাড়িয়ে সেই উদ্যোগ জেলাতেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন